• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
কবিতা

সংগৃহীত ছবি

সাহিত্য

কবিতা

  • প্রকাশিত ০৫ জানুয়ারি ২০১৯

সুজিত মান্না
অসম্পৃক্ত করার অনুরোধ জারি

তোমার আবশ্যিক হূদয়টা ঠিক চড়ুই পাখির মতো। মধ্যে থেকে
ভেসে আসে স্রোতনদীর পালক খোলা গন্ধ

এত বিস্ময় বিকেল নিভিয়ে দিয়ে পর্দা ছেড়ে রান্নাঘর তৈরি করে নেয়
আমি উনুনের পাশে নিজেকে এড়াতে পারি না বলে
ভেতর থেকে হুইশেল দিই—
ওই যে বিষণ্নতা দেখছো,
ছেলে হারানো মা হয়ে ধানক্ষেত গম খেত বেঁধেছে বুকে
ওর সাহচর্য পেয়েছি আমি—

আমার ভেতর অভিমানদের পালিশ দিয়েছি, তাদের শরীরে
পরিয়ে দিয়েছি রোয়া ধানের প্রত্যাশা
দেখলে বুঝবে, ভেতরে ভেতরে আমার আগ্নেয়গিরি
দুই হাত দিয়ে প্রাণের উল্লাস বাজাচ্ছে
অথচ আমার পাঁপড়ির ভেতর তোমার নাম দিয়ে সঞ্চয় বেড়ে উঠছে

উদাসীন হও ঈশ্বর, তুলনা টানো, দায়িত্বজ্ঞানীদের
অসম্পৃক্ত করো—
এত আগুন, এত অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে বেড়ে উঠছি
আমি কিন্তু যে কোনো মুহূর্তে বিকশিত যুদ্ধের উপকরণ হতে পারি

 

বিবিকা দেব
শীতের আদিম আয়োজন

নিকষ আলো আঁধারে বসে আছি খোলা চুলে। হিমে জড়িয়ে আড়ষ্ট পলকহীন চোখের পাতা। নিশি পবন শরীর জুড়ে প্রণয় নিবেদন। দৃঢ় প্রত্যয়ে রুক্ষ ঠোঁটে আলতো স্পর্শে ভোরের অপেক্ষা। সবুজ ঘাসে বিন্দু বিন্দু সমবেত শিশির। গল্পে ফিরে যায় আদিম আয়োজনে, বাতাসে হারিয়ে যাওয়া ইতিকথা। দীর্ঘ নিঃশ্বাসে খুঁজি এক মুঠো উষ্ণতা। সূর্যের চকচকে সোনালি আলোর আবির্ভাব। ধূলির ওড়াওড়িতে প্রজাপতিদের চড়ুইভাতি। হাসিমুখে ফুলেরা জড়িয়ে নিয়েছে পাতাদের শীত চাদর।

অতিথি পাখিরা ঝিলে মেতেছে জল খেলিতে। স্মৃতিকথা হিম কুটুরিতে রেখেছি জমা। চুইয়ে চুইয়ে পড়ে হালদার নিরুত্তাপ জলে। পাকা ধানের ভরাট শরীর জুড়ে শিশিরের মধুর আলিঙ্গন। জবজবে ভিজে প্রকৃতি প্রান্তর। শেষ প্রহরে নিষিক্ত প্রেমের চুম্বন। এঁকেছে কোন এক ভোরের প্রেমিক।

 

 

সাইয়্যিদ মঞ্জু
ঠিকানা

অস্তমুখী পথ গন্তব্য বটতলী বাজার
ডানে ফিরলে অন্তিম ঠিকানা
উত্তর-দক্ষিণে শুয়ে পূর্বপুরুষ
মুয়াজ্জিনের সুরেলা সুর করে শ্রবণ।

প্রার্থনার স্বরে খুঁজি এই ঠিকানা
আর্তনাদের ভাষায় অন্তিম কোনো মুহূর্তের কাছে
আবারো সেই কোলাহলের ভেতরে রেখে গেছি আমাকে।

 


জাফর পাঠান
অনুচিন্তন

নীলিম আকাশে আছে যত নীল
কষ্ট হয়ে আছড়ে পড়ছে চরাচরের বুকে
নীলে নীলে সয়লাব— নীল অভ্র, নীল অর্ণব
কষ্টের প্লাবন, জলোচ্ছ্বাস, নিচ্ছে ভাসিয়ে সব।

এই নীল বেদনার ভূজঙ্গ দংশিত নীলকণ্ঠ নীল
বহন করছে যা জর্জরিত ভব,
পুষ্প পল্লবের রেণু পরাগেও বাসা বেঁধেছে যা
সুপ্ত এক মুঠো ক্ষোভ।

ধরণি ধারণ করছে যত নিপীড়নের ধকল
ধারণ করছে যত প্রতিবাদীর পবিত্র শব
মৃত্তিকার প্রতিটি কণার সাথে মিশে ওরা
করছে বিক্ষুব্ধ বিক্ষোভ,
দেখতে হুবহু যা এক মুঠো ক্ষোভের অবয়ব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads