যাকির সাইদ
হিজলের ঘ্রাণ
গতকাল খুব ভোরে
মেঘের ডানায় চড়ে
আমার উঠোনে নেমেছিল
ধানসিঁড়ি নদী,
একটির পর একটি
ঢেউয়ের ভাঁজ খুলে
দেখালো রক্তাক্ত প্রেম,
হূদয় ছাপিয়ে সেই রক্ত
ট্রামের লাইন ধরে
গিয়েছিল বয়ে,
পাঠকের অন্তরতম
সত্তায়।
আমি নতজানু হয়ে বলি,
আড়াল পছন্দ খুব, তাই
আমৃত্যু ভালোবেসেছ
নির্জনতা।
তোমার এই নির্লিপ্ত
সচেতনতায়
আবিষ্ট হয়ে ঘুরে এসেছি
হিজলের বন, শুনেছি
হুতোম পেঁচার ডাক,
হিজলের ঘ্রাণ...
হুতোম পেঁচার ডাক
কানে বাজে আজো
আমার...
মাহফুজ রিপন
মাটির পৃথিবী
কালো দিগন্ত রেখার কাছে আমার মাটির ঘর
সে ঘরে নারী এবং শিশুরা রোজ হল্লা করে
আমি বনবাস থেকে পোড়া মাটির ঘ্রাণ পাই।
নদীর এপারে আমাদের কল্পনার সংসার
রান্নাবাটিতে লবণ আর মরিচের ব্যবধান।
রোজ রাতে তোমার বালিশ বদল খেলা
আমার এখানে শিথান পৈথান একাকার।
সুখ নিদ্রা ভেঙে গেলে দিক ভুলে যাই
কালো গ্রাম দেখলে হল্লা করে ছুটি।
অপেক্ষায় রাঙা বৌয়ের স্বপ্ন উড়াল দিল
দানাধরা চিন্তা থেকেই দিগন্ত রেখার শুরু।
টিপু সুলতান
পাঠক
তুমি যখন চরিত্রের অন্ত্যমিল খোঁজো
আমি তখন স্বাচ্ছন্দ্য শব্দের মহাসড়কে হাঁটি।
কবিতার মিথ, পরিমার্জিত উপমার কৈশোর রূপ
মুদ্রিত আদিমের স্থলে বৃক্ষ পাতার আঙুল
পৌষের ছায়াঘন রোদ্দুর-কুয়াশার উপত্যকা—
খানিকটা সবুজ উদ্যান পূর্ণাঙ্গ আলোকবর্তিকার
মতো কমলালেবুর রঙ, মজুত অন্ধকার প্রকাশ্য পড়ি।
আমি তখন বারংবার ফিরে আসি অলস পাঠকে
বেমিল আঙুলে শাদা-লু কালো চুলের বিলি কাটি-
এই ধর, ধবধবে মনে, ফুল আর শ্যাওলা মেশানো
বেহুঁশ জলে; কিংবা ট্রেনের বগিতে জমাট বাঁধা
কোলাহল ধ্বনি, নারী-পুরুষ ইঞ্জিনরুম, পালাক্রমে
যেখানে কবিতা এবং পৃথিবী একাকার, অ-দস্যু কবি!