• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
দেশভাগের করুণ চিত্রের কাছে একজন সর্বংসহা

দেশভাগের করুণ চিত্রের কাছে একজন সর্বংসহা

সাহিত্য

আগুনপাখি — হাসান আজিজুল হক

দেশভাগের করুণ চিত্রের কাছে একজন সর্বংসহা

  • মামুন মুস্তাফা
  • প্রকাশিত ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

তখনও পাতার শিষে জেগে ছিল নতুন ভোর। নতুন বসতির কাছে জন্মনাড়ির বেড়ে ওঠা ঐকতান; শুধু বিসর্জনের ঢেউ গুনে জন্মভিটেয় দাঁড়িয়ে একা— ওই বলিরেখায় ভাঙনের চিত্র, দেশভাগের করুণ নির্মিতি! এক জবানিতে উঠে এসেছে ব্রিটিশভুক্ত এই বাংলার একটি মধ্যবিত্ত মুসলমান পরিবারের উত্থান-পতনের নির্মম ইতিহাস। মন্বন্তর, দাঙ্গা, দেশভাগ— সবকিছুর জ্বলন্ত সাক্ষী আপনি! একা টেনে নিয়ে গেছেন জগৎসংসার, ধারণ করেছেন পুত্রশোক, চেয়ে চেয়ে দেখেছেন স্বামীর কর্তৃত্ব আর হলুদ রাজনীতির নীল-নক্শা— কীভাবে নিজভূমে করেছে পর আপন সম্প্রদায়সহ হিন্দু-মুসলমান। তবু আপনি ছেড়ে যেতে পারেননি জন্মভিটে! কিসের আশায়?

অবিশ্বাসী রাজনীতি, মহামারী, জাতিগত দাঙ্গা— এমনকি ধর্মও আপনাকে বিভক্ত করতে পারেনি— মানুষ-জন্ম আপনাকে করেছে মহীয়ান। দেশভাগের সঙ্কুচিত মানচিত্রে নিজেকে আবিষ্কার করে চেয়ে দেখেন ভোর ও রাত্রির অব্যবহিত সময়ের ভেতরে ছায়া বেড়ে গেছে, সাংসারিক বৃষ্টি ধরে এসেছে, সামনে শূন্য, খাঁ খাঁ, কেবলই নিজের ঘন শ্বাস কানে বাজে;— স্বামী-পুত্র-কন্যা সকলেই আজ পরবাসী, একটি নীল পাসপোর্টে বন্দি দুপাড়ের জীবন, কোনোদিন তারা ছিল এক ও অভেদ।

দেশভাগের শতচ্ছিন্ন আঁচলে জড়ানো শুধু বড়খোকার কবরের শুকনো মাটি— ওখানেই শয্যা পেতে কেটে যাবে বাকি জীবন! স্বামীর রেখে যাওয়া এক চিলতে উঠোনে দাঁড়িয়ে একা আজ তাই ‘এ-জন্মের গতানুগতিক ক্লান্ত মুখচ্ছবিটির জন্য চাক্ষুষ অশ্রুবিসর্জন’ আর নয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads