• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’

‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সাহিত্য

‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’

  • তাবাস্সুম তৈয়্যবা
  • প্রকাশিত ০২ মার্চ ২০১৯

২৫ মার্চ বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি নৃশংসতম দিন। এদিন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর চালায় ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ। এই দিনটি ছিল বাঙালি জাতির অহঙ্কারের দিন। পাক হানাদারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল পুলিশের বীর সেনানীদের থ্রি-নট-থ্রি। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও উদাত্য আহ্বানে সেদিন পুলিশ বাহিনী দৃপ্ত মনোবলে রাজারবাগে গড়ে তুলেছিল দুর্বার প্রতিরোধ। নিরীহ জনতা ও পুলিশের ওপর পাকসেনাদের আক্রমণের খবর কেন্দ্রীয় পুলিশের বেতারের মাধ্যমে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। পাকবাহিনীর আক্রমণ রুখে দিতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেশব্যাপী পুলিশ লাইনসগুলোতে নেওয়া হয় সর্বাত্মক প্রস্তুতি।

মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী এসব বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগের ইতিহাস জানার জন্য ‘বাংলাদেশ পুলিশ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক উপপরিষদ’ ২০১০ সালের ২৫ মার্চ প্রকাশ করে ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’ শিরোনামের একটি স্মরণিকা। বিষয়বস্তু অপরিবর্তিত রেখে কয়েকটি নতুন লেখা যুক্ত করে বর্তমানে নতুন আঙ্গিকে গ্রন্থটি প্রকাশ করা হয়েছে। এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ‘বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা জাদুঘর’। প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পুলিশ সদস্যদের লেখনীর পাশাপাশি এই পুস্তকে স্থান পেয়েছে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসবাসরত ব্যক্তিদের স্মৃতিকথা। সংযুক্ত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক একাধিক গবেষকের লিখিত নিবন্ধ। এই গ্রন্থটি সম্পাদনা করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম।

হাবিবুর রহমানের জন্ম ১৯৬৭ সালে গোপালগঞ্জ জেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামে। গোপালগঞ্জের চন্দ্রদিঘলিয়া মোল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিলাভ করেন। ১৯৯৮ সালে ১৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন। হাবিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বিশেষত বাংলাদেশ পুলিশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সমুজ্জ্বল করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। চাকরিস্থলে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে মানবসেবা ও সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন। পেশাগত জীবনে কৃতিত্বের জন্য লাভ করেছেন প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি তেমনি অর্জন করেছেন রাষ্ট্রীয় পুরস্কারও। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা শুধু বাংলাদেশে নয়, দেশের সীমা ছাড়িয়ে সমগ্র বিশ্বে উদ্ভাসিত করার মানসে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’।

নতুন এ প্রবন্ধ নিয়ে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘পুুলিশিংয়ের মতো একটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং পেশায় নিয়োজিত সদস্যরা নিজেদের কর্মপরিসীমা অতিক্রম করে যে ইতিহাস লিপিবদ্ধ করেছেন তা পুস্তকাকারে পাতায় মুদ্রিত হয়ে অত্যন্ত মূল্যবান দলিল হিসেবে সমাদৃত হবে, হয়ে উঠবে বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের সমৃদ্ধ ভান্ডার।

জনগণের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের গৌরবদীপ্ত ভূমিকাকে সহজলভ্য করে উপস্থাপন করবে। স্বাধীনতা সংগ্রামের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে সক্ষম হবে বলে আমার বিশ্বাস।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads