• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
সিরাজদিখানে যৌথভাবে চাষ হচ্ছে ব্রকলি-পুদিনাপাতা-লেটুসপাতা

যৌথভাবে চাষ হচ্ছে ব্রকলি পুদিনাপাতা লেটুসপাতা

সাহিত্য

সিরাজদিখানে যৌথভাবে চাষ হচ্ছে ব্রকলি-পুদিনাপাতা-লেটুসপাতা

  • সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় একই জমিনে যৌথভাবে চাষ হচ্ছে ব্রকলি,পুদিনা পাতা ও বিদেশী লেটুসপাতা। উপজেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে শীতকালীন এইসব বিদেশী সবজি সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের চান্দের চর খাসকান্দি গ্রাম ছাড়া অন্য কোথায়ও চাষ হয়না বলে জানান। বর্তমান মৌসুমে উপজেলার বিস্তৃন ফসলি জমিন জুড়ে শুধু আলু আর আলু তারই মাঝখানে চমৎকার ভাবে সাজানো গোছানো দৃষ্টিনন্দন ব্রকলি,পুদিনাপাতা ও বিদেশী লেটুসপাতা চাষ করা জমিগুলো বাড়তি সৌন্দর্য বর্ধন করছে আশেপাশের ফসলি জমির।

বিদেশি লেটুসপাতা, ব্রকলি, পুদিনাপাতা চাষে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন এখানকার চাষিরা। অল্প অল্প জমিনে চাষ করতে করতে বিগত কয়েক বছর ধরে এখন ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে বিদেশি এসব সবজি। প্রাচীন মিসরীয়রা আগাছা থেকে সর্বপ্রথম লেটুসের আবিষ্কার করেন তারপর গ্রিক এবং রোমানদের কাছে তেলসমৃদ্ধ বীজের কারণে এই উদ্ভিজ্জ লেটুসপাতা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আস্তে আস্তে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকা লেটুসের বাজারে আধিপত্য বিস্তার করে এবং বিংশ শতাব্দীর শেষদিকে লেটুসের ব্যবহার বিশ্বব্যাপী বিস্তৃতি লাভ করে।এই অঞ্চলে ৪০ থেকে ৫০ বছর ধরে পুদিনাপাতা চাষে জড়িত এখানকার কৃষকরা। মাহে রমজান আসলে পুদিনার চাহিদা থাকে তুঙ্গে। ব্রকলি ক্রসিফেরী গোত্রের অন্তর্ভুক্ত শীতকালীন সবজি এটি। এতে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফোলেট, আঁশ আছে। এতে চযুঃড়হঁঃৎরবহঃং থাকায় হৃদরোগ, বহুমূত্র এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। ব্রকলি জারণরোধী ভিটামিন এ এবং সি সরবরাহ করে কোষের ক্ষতি রোধ করে।ব্রকলিতে পাওয়া যায় উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি। দিনে মাত্র ১০০ গ্রাম ব্রকলি শরীরে প্রতিদিনের ভিটামিন সি এর চাহিদার ১৫০% পূরণ হতে পারে।অনেকটা ফুলকপির মতোই দেখতে সবুজ রঙের সবিজিটি দিনে দিনে এটি বেশ পরিচিত হয়েছে আমাদের দেশে।

স্থানীয় চাষি জমির বেপারীর সাথে কথা বললে তিনি জানান,বিদেশি লেটুসপাতা,ব্রকলি,পুদিনাপাতা মূলত এইসব সবজি চাষ সমগ্র মুন্সীগঞ্জে কেবল আমরাই করি।এর মধ্যে পুদিনাপাতার চাষ আগে থেকেই করি কিন্ত লেটুসপাতা,ব্রকলিটা ইদানীং বেশী চাষ করছি।কৃষক শফিক মিয়া বলেন, আমাদের এখানে যে লেটুসপাতা,ব্রকলি,পুদিনাপাতা চাষ হয় এগুলো বিদেশী।এগুলোর বীজ পাওয়া যায় ঢাকার সিদ্দিক বাজারে। বীজগুলো চওড়া দামে কিনে আনতে হয়।সবজিগুলো খাবারের উপযুক্ত হয়ে গেলে। যাত্রাবাড়ী শ্যামবাজার কাওরানবাজারে পিস হিসেবে বিক্রি হয় পুদিনা পাতা বিক্রি হয় আটি হিসেবে।বিদেশী এইসব সবজি চাষ করে অবশ্যই লাভবান হওন বলে জানান তারা।তবে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা তার কখনো পায়নি বলে আক্ষেপ তাদের।

সবগুলো সবজি সাধারণত সালাদ, বার্গারের ভেতরে বা স্যান্ডউইচের মাঝে দিয়ে খেয়ে থাকেন কাঁচা ও রান্না উভয়ভাবেই খাওয়া যায়। এতে নানা রকম ভিটামিন ছাড়াও রয়েছে একেবারে কম ক্যালরি। এইসব সবজি বিশ্ব বাজারে ও ঢাকাতে বিভিন্ন চাইনিজ রেস্তোরাঁয় বহু সুস্বাদু খাবারের সঙ্গে ও খাবারের পাশে ডেকোরেশনের জন্য ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে চাহিদা অত্যন্ত বেশি বিশেষ করে তৈল স¤পদে ভরপুর কুয়েত, সৌদি আরব, দুবাই, কাতারে। এই সবজি দৈনন্দিন জীবনে ভোজনরসিকরা প্রায় প্রতিবারের খাবার তালিকায় আগ্রহ নিয়ে খেয়ে থাকেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র রায় বলেন, উপজেলায় লেটুসপাতা,ব্রকলি,পুদিনাপাতা শুধু মাত্র বালুচর ইউনিয়নের কয়েকটি আলাকায় চাষ হয়। লেটুসপাতা,ব্রকলি,পুদিনাপাতা চাষে কৃষি অফিস থেকে কোনো অনুদান দেয়া হয় না। তবে তারা যদি কোনো পরামর্শ ও সহযোগিতা চান আমরা দিতে আগ্রহী।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বদিউজ্জামান বলেন,লেটুসপাতা,ব্রকলি,পুদিনাপাতায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি ও সি রয়েছে। তাই এগুলো বেশ উপকারী সুষম খাদ্য।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads