• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ইসলামে শ্রমের মর্যাদা

সংগৃহীত ছবি

বিবিধ

ইসলামে শ্রমের মর্যাদা

  • প্রকাশিত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ইসলামে শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদা অপরিসীম। শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কোরআনুল কারিম ও হাদিস শরিফে সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআন মাজিদে আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে জীবিকার্জনের জন্য তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।’ (সুরা আল জুমআহ)।

পৃথিবীর সর্বপ্রথম মানুষ ও প্রথম নবী হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে বহু নবী-রাসুল, এমনকি সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) শ্রমজীবী মানুষ ছিলেন। নবী-রাসুল এবং সাহাবায়ে কেরামগণ নিজ হাতে কাজ করে জীবিকা উপার্জন করেছেন। আমাদের প্রথম নবী হজরত আদম (আ.) ছিলেন দুনিয়ার প্রথম চাষি। হজরত মুসা (আ.) ছিলেন একজন রাখাল। ইসলামের প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর (রা.) এবং মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) ছিলেন সৎ ব্যবসায়ী।

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ দুনিয়াতে এমন কোনো নবী পাঠাননি যিনি ছাগল ও ভেড়া চড়াননি।’ তখন সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, হে রাসুল (সা.) আপনিও? রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হ্যাঁ! আমিও মজুরির বিনিময়ে মক্কাবাসীদের ছাগল ও  ভেড়া চরাতাম।’ (বোখারি শরিফ)। হজরত রাসুল (সা.) শ্রমিকের অধিকার ও মর্যাদার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে মালিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তার পারিশ্রমিক পরিশোধ করে দাও।’ (ইবনে মাজাহ)।

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আরো এরশাদ করেন, ‘আল্লাহতায়ালা বলেছেন, আমি কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণির মানুষের প্রতিপক্ষ। আর আমি যার প্রতিপক্ষ, তাকে পরাজিত করবই। তন্মধ্যে এক শ্রেণি হলো, যে কোনো শ্রমিক নিয়োগ করে, অতঃপর তার থেকে পুরো কাজ আদায় করে নেয়; কিন্তু তার পারিশ্রমিক প্রদান করে না।’ (বুখারি শরিফ)।

রাসুলুল্লাহকে (সা.) জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, কোন ধরনের উপার্জন উত্তম ও শ্রেষ্ঠ? তিনি প্রত্যুত্তরে বলেন, ‘ব্যক্তির নিজ হাতে কাজ করা এবং সৎ ব্যবসা।’ হজরত উম্মে সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) মৃত্যুশয্যার সময়ও নামাজ এবং অধীনদের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করেছেন। পরিশেষে বলা যায়, একমাত্র ইসলাম ধর্মই শ্রম এবং শ্রমিকের যথাযথ অধিকার ও মর্যাদার যথার্থ মূল্যায়ন করেছে।

সুতরাং পৃথিবীতে শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা ঠিক সময়ে যথাযথ মর্যাদায় পরিশোধ করে দেওয়া একজন মুমিন মুসলমান হিসেবে আমাদের কর্তব্য হওয়া উচিত। আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক দান করুন। আমিন।

লেখক: এহসান বিন মুজাহির

আলেম

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads