জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মদানকারী ৪ বাংলাদেশিসহ বিশ্বের ৩৭টি দেশের ১২৮ শান্তিরক্ষীকে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল’ দিয়েছে জাতিসংঘ। গত শুক্রবার জাতিসংঘ সদর দফতরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশসহ ৩৭টি দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিদের হাতে এ মেডেল তুলে দেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল শনিবার এ তথ্য জানায়।
সম্মাননাপ্রাপ্ত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা হলেন ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক মো. আবদুর রহিম, ২০১৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর মালি মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত সৈনিক মো. মনোয়ার হোসেন, ল্যান্স কর্পোরাল মো. জাকিরুল আলম সরকার ও সার্জেন্ট মো. আলতাফ হোসেন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্মাননা মেডেল গ্রহণ করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খান ফিরোজ আহমেদসহ জাতিসংঘে কর্মরত বাংলাদেশ সেনা, নৌ, বিমান ও পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই মহাসচিব গুতেরেস কর্তব্যরত অবস্থায় জীবনদানকারী সামরিক ও বেসামরিক শান্তিরক্ষীকর্মীদের বিদেহী আত্মার স্মরণে জাতিসংঘ সদর দফতরের পিসকিপিং মেমোরিয়াল সাইটে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় আত্মদানকারী শান্তিরক্ষীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তার বক্তব্যে বলেন, আজ থেকে ৭০ বছর আগে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রথম মিশন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি সামরিক, পুলিশ ও বেসামরিক শান্তিরক্ষাকর্মী কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত হয়েছেন। এসব শান্তিরক্ষী অন্যদের জীবন রক্ষায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। আমরা সারা জীবন তাদের কাছে ঋণী এবং তারা সব সময়ই আমাদের অন্তরে গভীর মমতায় প্রোথিত থাকবেন।
জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর স্থায়ী প্রতিনিধিরাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কূটনৈতিক, সামরিক ও পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ একটি অন্যতম বৃহৎ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। ১৯৮৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় বাংলাদেশের ১৪৩ জন শান্তিরক্ষী মারা গেছেন।
