• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার

মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং তুন

সংরক্ষিত ছবি

জাতীয়

সিঙ্গাপুরে নিরাপত্তা সংলাপে থাউং তুন

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে মিয়ানমার

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৩ জুন ২০১৮

স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে চাইলে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সব রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনে আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে মিয়ানমার। দেশটির পক্ষে আবারো এ আগ্রহের কথা জানান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা থাউং তুন। গতকাল শনিবার সিঙ্গাপুরে আঞ্চলিক নিরাপত্তা সম্মেলন শাংরি-লা সংলাপে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার আগ্রহে রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের আরটুপি (রেসপনসিভিলিটি টু প্রটেক্ট) ফ্রেমওয়ার্ক কার্যকর করলে উত্তেজনা সৃষ্টির শঙ্কা আছে কি না জানতে চাইলে থাউং তুন বলেন, বাংলাদেশে আশ্রিত ৭ লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো গেলে মিয়ানমার তাদের গ্রহণে আগ্রহী। এটাকে কি জাতিগত নিধন বলা যায়? সে ক্ষেত্রে এটাকে কি জাতিগত নিধন বলা যায় কি না পাল্টা প্রশ্ন রাখেন তিনি।

তিনি বলেন, রাখাইনে কোনো যুদ্ধ চলছে না, তাই এটা যুদ্ধাপরাধ নয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়টি কিছুটা বিবেচনা করা যেতে পারে। কিন্তু আমাদের অকাট্য প্রমাণ লাগবে। এই গুরুতর অপরাধ প্রমাণিত হতে হবে এবং তা নিয়ে হালকাভাবে আলোচনা করা উচিত নয়।

মিয়ানমার উপদেষ্টা জানান, দেশকে রক্ষার অধিকার রয়েছে সেনাবাহিনীর। তবে তদন্তে সেনা সদস্যদের আইন লঙ্ঘন করার প্রমাণ পাওয়া গেলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

থাউং তুন জানান, রাখাইনের যে তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে, তা ‘অসম্পূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর’। তিনি বলেন, রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে যে মানবিক সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে, মিয়ানমার সেটাকে অস্বীকার করছে না। রাখাইনের মুসলিম জনগোষ্ঠী ভুক্তভোগী, তা অস্বীকার করা হচ্ছে না। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন, হিন্দু ও অন্য সংখ্যালঘুরাও কম নিপীড়িত হচ্ছে না।

২০০৫ সালে জাতিসংঘের বিশ্ব সম্মেলনে এই আরটুপি ফ্রেমওয়ার্ক সদস্যদের সম্মতিতে গৃহীত হয়। এর মধ্য দিয়ে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, জাতিগত নিধন ও মানবতাবিরোধী অপরাধ থেকে নিজ দেশের জনগণকে রক্ষা এবং এই প্রতিশ্রুতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে এক দেশ অন্য দেশকে সহযোগিতা করবে।

হত্যা, নির্যাতনের মুখে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার অভিযোগে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা  জোরালো করে মিয়ানমার।

জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দাতা সংস্থা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে এ নিপীড়নকে জাতিগত নিধনযজ্ঞের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র এ ঘটনাকে জাতিগত নিধনযজ্ঞ আখ্যায়িত করেছে। মিয়ানমার এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। গত জানুয়ারি উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে প্রত্যাবাসন চুক্তিও। চুক্তিতে বলা হয়েছে, আগ্রহীদের দুই বছরের মধ্যে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

নির্বিঘ্ন প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে গত মঙ্গলবার নেইপিডোতে জাতিসংঘের সঙ্গে সমঝোতা সই করে মিয়ানমার। ওই সমঝোতায় রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের কথাও বলা হয়েছে। তবে রোহিঙ্গারা কবে ফিরতে পারবে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এত দিন মিয়ানমার বলে আসছিল, যেসব রোহিঙ্গা মিয়ানমারের বাসিন্দা হিসেবে নিজেদের প্রমাণ  দিতে পারবে কেবল তাদেরই ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads