• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
নূর চৌধুরীকে ফেরত চাইলেন শেখ হাসিনা

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম সাজাপ্রাপ্ত পলাতক খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরত চাইলো বাংলাদেশ

সংরক্ষিত ছবি

জাতীয়

হাসিনা-ট্রুডো বৈঠক

নূর চৌধুরীকে ফেরত চাইলেন শেখ হাসিনা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১২ জুন ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার অন্যতম সাজাপ্রাপ্ত পলাতক খুনি নূর চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য কানাডা সরকারের কাছে তার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। গত রোববার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। একই দিন কানাডা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরত আনতে তার সরকার কানাডার আদালতে লড়বে।

বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী কানাডার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে নূর চৌধুরীকে দ্রুততার সঙ্গে দেশে ফেরত পাঠাতে ব্যবস্থা গ্রহণে তার প্রতি অনুরোধ জানান বলে প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ও পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক কুইবেকে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন লা পেতিত ফ্রন্টেন্সে এই বৈঠকের সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে, বিশেষ করে নূর চৌধুরীকে দেশে ফেরত পাঠানো এবং বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী নূর চৌধুরীকে ফেরত পাঠনোর ব্যাপারে ব্যক্তিগত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে ট্রুডোকে বলেন, কানাডায় বসবাসকারী নূর চৌধুরী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সরাসরি গুলি করে হত্যাকারী দু’জনের মধ্যে অন্যতম। সে একজন আত্মস্বীকৃত খুনি এবং বাংলাদেশের প্রচলিত আইনেও দণ্ডপ্রাপ্ত।

প্রেস সচিব জানান, জবাবে জাস্টিন ট্রুডো সহানুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আমি বিষয়টা বুঝতে পারি যে, এটা আপনার জন্য কতটা বেদনার। সংশ্লিষ্ট কানাডীয় কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে একান্তে কাজ করছেন উল্লেখ করে ট্রুডো বলেন, নূর চৌধুরী কানাডার নাগরিকত্বের মর্যাদা পেতে পারে না এবং সে কানাডার নাগরিকও নয়। পাশাপাশি কানাডার প্রধানমন্ত্রী এ সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে তার দেশের প্রচলিত আইনগত বিষয় ব্যাখ্যা করেন। শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশকে সাহায্য-সহযোগিতার জন্য কানাডা সরকারকে ধন্যবাদ জানান। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে সফল প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, চুক্তি হলেও তা বাস্তবায়নের ব্যাপারে তারা নীরব রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে তাদের পাহাড়ের উপরকার ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান থেকে সরিয়ে একটি নিরাপদ দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে।

কানাডার আদালতে লড়বে সরকার : রোববার রাতে কুইবেকে মেট্রো কনভেনশন সেন্টারে আওয়ামী লীগ কানাডা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নূর চৌধুরীকে ফেরত আনতে তার সরকার কানাডার আদালতে লড়বে। এ বিষয়ে কানাডা প্রবাসী সব বাংলাদেশির সাহায্য-সহযোগিতা প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, জাতির পিতাকে সরাসরি গুলি করে হত্যাকারী নূর চৌধুরী বর্তমানে গোপনে কানাডায় বসবাস করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দণ্ডপ্রাপ্ত খুনিদের শাস্তি কার্যকর করতে চাই। কেননা তারা বাংলাদেশের জন্য অভিশাপ। শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর পলাতক অন্য খুনিদেরও দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। যাদের মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে এবং রশিদ ও ডালিম পাকিস্তানে বসবাস করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার সম্পন্ন করায় এবং যুদ্ধাপরাধী-স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ হওয়ায় বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হতে শুরু করেছে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, আওয়ামী লীগ নেত্রী হাসিনা আক্তার জানু, অন্টারিও প্রদেশ শাখা আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সালাম, ইরতাহাদ জুবেরী সেলিম, কানাডা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ মহমুদ মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান প্রিন্স অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫ পরবর্তী শাসকরা আমাদের দেশের গণতন্ত্রই কেবল ধ্বংস করেনি উপরন্তু সমগ্র অর্থনীতিকেও ধ্বংস করে দেয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে দেশের মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে তার গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে অব্যাহত রাখতে হবে। প্রবাসী বাংলাদেশি ও দেশে তাদের স্বজনদের সতর্ক থাকতে হবে যাতে আগামীর নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে দেশের উন্নয়নের গতি বজায় থাকে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads