কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে এবার মাঠে নেমেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকরা। গতকাল রোববার ‘সচেতন শিক্ষক সমাজ’-এর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে সমাবেশ করেন তারা। সেখানে তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান এবং আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে কর্মসূচি পালন করা শিক্ষকদের বেশ কিছু কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেন।
সমাবেশে শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করার ‘অপপ্রয়াস’ বন্ধের আহ্বান জানান। তারা বলেন, কোটা আন্দোলনের দাবি যৌক্তিক এবং এই প্রক্রিয়ার অবশ্যই সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু আন্দোলনের নামে একটি মহল ছাত্রদের বিভ্রান্ত করে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছে।
ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয়ভাবে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে একটি পক্ষ। ১৯ তারিখে নিপীড়নবিরোধী শিক্ষকদের কর্মসূচিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক আকমল হোসেন বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছেন। এর প্রতিবাদ না করে অনেকে হাততালি দিয়েছেন। তখন আমাদের বুঝতে বাকি থাকে না এরা কারা। অপ্রাসঙ্গিক ইস্যু এনে বঙ্গবন্ধুকে আক্রমণ করা হচ্ছে। তারা তারেক জিয়ার ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘কোটার নামে, নিপীড়নের নামে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা বা কটাক্ষ করা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। এসব কাজে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর আগেও এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ এ সময় মাকসুদ কামাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র যদি অন্যায়ভাবে কারাগারে থাকে তাকে ছাড়িয়ে আনতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষক সমাজ ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। কিন্তু নায্য দাবির সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করব।’ রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ ড. জিনাত হুদা বলেন, ‘কোটা আন্দোলন গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু আন্দোলনের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অরাজকতা তৈরি করা হচ্ছে, আমাদের এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।’
অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম, শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক তাজিন আজিজ চৌধুরী, সিন্ডিকেট সদস্য সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির প্রমুখ।
