আইন ভাঙার জন্য নয়, মানার জন্য তৈরি হয় বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমরা যারা আইন প্রয়োগ করব, তারা সবার আগে আইন মানব- এটা জনসাধারণ দেখতে চায়।’ গতকাল সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে এক সভায় এসব কথার পাশাপাশি বড়পুকুরিয়া কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্ত প্রতিবেদন শিগগির দাখিল করা হবে বলে জানান তিনি।
‘দুর্নীতি প্রতিরোধ ও উত্তম চর্চার বিকাশে এফএম বেতারের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিআরটিএ’র বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে কমিশন সবচেয়ে বেশিসংখ্যক অভিযান পরিচালনা করেছে। বেশ কয়েক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাদের গ্রেফতারও করা হয়েছে। তার পরও তাদের বিষয়ে অভিযোগের শেষ নেই। কমিশন তাদের কার্যক্রম গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।’ তিনি বলেন, ‘আইন তৈরি হয় আইন মানার জন্য, তা ভাঙার জন্য নয়। আসুন, নিজেদের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে আইন মেনে চলি।’ কীভাবে উল্টোপথে গাড়ি চলে- প্রশ্ন রেখে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এটা অবশ্যই থামাতে হবে। পথচারী সেতু রয়েছে অথচ আমরা কেউ ব্যবহার করব না এটাও হতে পারে না।’
দুদক চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দেশপ্রেম ও নৈতিক মূল্যবোধকে আরো শানিত করার লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন এফএম বেতারের সহযোগিতায় বিশেষ বার্তা প্রচার করতে চায়। দেশব্যাপী নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গঠিত প্রায় ২৫ হাজার সততা সংঘ, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, কার্টুন, রচনা প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মসূচির মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বিভিন্ন সূচকে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করলেও শিক্ষার মান নিয়ে বিভিন্ন মহলে নেতিবাচক সমালোচনা রয়েছে। নতুন প্রজন্মকে মূল্যবোধসম্পন্ন শিক্ষায় শিক্ষিত করা না যায়, তাহলে টেকসই উন্নয়ন কঠিন হতে পারে।’
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে ‘রেডিও ভূমি’র শামস সুমন, ‘পিপলস রেডিও’র আবদুল আউয়াল, ‘রেডিও টুডে’র মো. সোয়েবুল হক, এবিসি রেডিও’র তালাত মাহমুদ বক্তব্য দেন। বক্তব্যে এফএম বেতারের প্রতিনিধিরা তাদের রেটিং মান মূল্যায়ন প্রতিষ্ঠান ‘এমআরবি গ্লোবাল’-এর গবেষণার পদ্ধতি নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করে দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। দুদক চেয়ারম্যান জানান, রেডিও ও টেলিভিশনের মান নিয়ে কাজ করা এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যপদ্ধতি কমিশন বিধিমত খতিয়ে দেখতে পারে।