• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়ার সংশ্লিষ্টতা স্পষ্ট

বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে গতকাল জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

ছবি -বাংলাদেশের খবর

জাতীয়

আলোচনা সভায় আইনমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়ার সংশ্লিষ্টতা স্পষ্ট

উপস্থিত ছিলেন ৫০ কূটনীতিক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ আগস্ট ২০১৮

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর আদালতে বিচার কার্যক্রম শেষ হলেও এখনো হত্যার পরিকল্পনাকারীদের বিচার হয়নি। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টতা এখন স্পষ্ট। গতকাল শনিবার আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটি আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনায় এ দাবি করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও অন্যরা।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ফারুক খান এমপি, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মি আহমেদ। ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রায় ৫০ জন কূটনীতিক উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রধান প্রসিকিউটর আনিসুল হক জানান, জাতির পিতাকে হত্যার পর আইন করে সেই হত্যার বিচার কার্যক্রম বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করা হয়। ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর খন্দকার মোস্তাক আহমেদ ইনডেমনিটি বিলে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু তার পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতা নিলেও আইনটি বাতিল করেননি। শুধু তাই নয়, জিয়াউর রহমানের পর এরশাদ এবং ১৯৯০ সালে বিএনপি পুনরায় ক্ষমতায় এসেও এই কালো আইন বাতিল করেনি। তাছাড়া ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই আইন বাতিল হয় এবং মামলার কার্যক্রম শেষ হয়।

বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টতা এখন স্পষ্ট দাবি করে আইনমন্ত্রী বলেন, মামলা নিয়ে বিচারকদের বিব্রতবোধের বিড়ম্বনার পাশাপাশি তথ্য ও দলিলাদি সংগ্রহ করতে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে সরাসরি হত্যাকারীদের আমরা বিচারের আওতায় আনতে পেরেছি। কিন্তু মূল পরিকল্পনাকারীরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাই, আদালতে বিচারকাজ শেষ হলেও হত্যার পরিকল্পনাকারীদের বিচার হয়নি।

অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি বলেন, আমার বয়স তখন মাত্র ৩ বছর ৯ মাস। মা-বাবার সঙ্গে কোনো সুখস্মৃতি আমার মনে নেই। শুধু মনে আছে, মেঝেতে রক্তাক্ত পড়ে থাকা আমার বাবার লাশ এবং তার পর মেঝেজুড়ে ছড়িয়ে থাকা রক্তের কথা।

তিনি বলেন, ১৯ নভেম্বর আমার জন্মদিন। এই দিনে বঙ্গবন্ধু ও আমার পরিবারকে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে পূর্ণ রায় পাই। কখনো আমার জন্মদিন পালন করা হয়নি। কিন্তু এটি ছিল আমার জন্য জন্মদিনের সবচেয়ে বড় উপহার।

তাপস উপস্থিত কূটনীতিকদের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখেন, আত্মস্বীকৃত খুনিরা জানিয়েছেন, জিয়াউর রহমানের সঙ্গে দেখা করে ক্যু-এর কথা জানানো হয় এবং প্রতি উত্তরে জিয়া বলেন, ‘গো অ্যাহেড’। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এমনকি ভারতেও কোনো আর্মি অফিসারের এমন মন্তব্যকে কী বলা হয়? এটা কি সরাসরি রাষ্ট্রদ্রোহিতা নয়? বিষয়টা এভাবেই বলা, ‘আমি যেতে পারছি না, তোমরা কাজটি করে এসো’। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমানের সংশ্লিষ্টতা এখন স্পষ্ট। আমি কবরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বলে যাব, বঙ্গবন্ধু ও আমার পরিবার হত্যায় সরাসরি জড়িত জিয়াউর রহমান ও খন্দকার মোশতাক।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর জাপানি চলচ্চিত্রকারের নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের সাক্ষাৎকার এবং এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের একটি সাক্ষাৎকার প্রদর্শন করা হয়।

অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ডা. দীপু মনি। আলোচনা শেষে কূটনীতিকরা বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ঘুরে দেখেন ও তাঁর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads