• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেলদের বিরুদ্ধে তদন্ত চায় জাতিসংঘ

জাতিসংঘের প্রকাশিত এক রিপোর্ট

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

রাখাইনে গণহত্যা

মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেলদের বিরুদ্ধে তদন্ত চায় জাতিসংঘ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৮ আগস্ট ২০১৮

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত বছর গণহত্যা চালানোয় দেশটির সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের অবশ্যই তদন্তের আওতায় আনতে হবে। গতকাল সোমবার শতাধিক রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে জাতিসংঘের প্রকাশিত এক রিপোর্টে এমন দাবি জানানো হয়। এ বিষয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল তুন তুন নাইয়ি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। খবর বিবিসি।

রিপোর্টে শীর্ষস্থানীয় ছয় সেনা কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা উচিত। অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ৩৩ লাইট ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অং অং এবং সেনাপ্রধান মিং অং হ্লাংয়ের নাম রয়েছে। তাদের নির্দেশেই ইন দিস গ্রামে দশ রোহিঙ্গা শিশুকে হত্যা করা হয়েছিল।

এ ছাড়াও নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সুচির বেসামরিক সরকার বিদ্বেষমূলক প্রচারণাকে উসকে দেওয়ায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলামত ধ্বংস হয়েছে বলেও রিপোর্টে বলা হয়। জাতিসংঘ সর্বশেষ রিপোর্টটি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) কাছে হস্তান্তর করেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্যানেলের মতে, দেশটির সেনাপ্রধানের পদত্যাগ করা উচিত। জাতিসংঘের সর্বশেষ রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর সেনাপ্রধানসহ মিয়ানমারের ২০ জন নাগরিক ও প্রতিষ্ঠানকে নিষিদ্ধ করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ।

মিয়ানমার সরকার শুরু থেকেই বলে আসছে, রাখাইন রাজ্যে পরিচালিত তাদের অভিযান ছিল জঙ্গি এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু রিপোর্টে বলা হয়, অত্যাচারের যে নমুনা পাওয়া যায় তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নারীদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, শিশুহত্যা এবং গোটা গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনার পরও এটাকে শুধু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযান বলা যায় না।

এক বছর আগে মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী রাখাইন রাজ্যে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ) বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর নাম করে ব্যাপক নির্যাতন চালায়। ওই অভিযানের ফলে অন্তত সাত লাখ রোহিঙ্গা পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

জাতিসংঘ ‘গণহত্যা’ বলতে জাতিগোষ্ঠী নিধন, সংখ্যালঘু অথবা ধর্মভিত্তিক কোনো গোষ্ঠীর ওপর পরিচালিত অভিযানকে বোঝায়। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে এমন শব্দ খুব একটা ব্যবহার করা হয় না- যেমনটা হয়েছিল বসনিয়া, সুদান, ইরাক এবং সিরিয়া যুদ্ধের ক্ষেত্রে।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের মতে, মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর কৌশল ধারাবাহিক ও প্রবলভাবে অসামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল। এমন ঘটনায় তৈরি হয় নিরাপত্তার হুমকি। তাই রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে হত্যা, ধর্ষণ ও গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে বৈধতা দেওয়া যায় না। বিশ পৃষ্ঠার ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়, সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় জেনারেলদের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত তথ্য রয়েছে- যা গণহত্যার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ও দায়বদ্ধতা প্রমাণ করে।

২০১৭ সালের মার্চে জাতিসংঘের স্বাধীন ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠন হয়। মিয়ানমারের বিভিন্ন অংশে বিশেষত রাখাইন রাজ্যে মানবাধিকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা ছিল মিশনের কাজ। তাদের রিপোর্টে বলা হয়, গত কয়েক দশক ধরেই মিয়ানমারে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রোহিঙ্গারা বহু আগে থেকেই নিয়মতান্ত্রিক নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। রাখাইন রাজ্য ছাড়াও কাচিন ও শান রাজ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads