• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
বিচারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত এপিএইচআর-অ্যামনেস্টির

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা

সংরক্ষিত ছবি

জাতীয়

আইসিসির কাঠগড়ায় মিয়ানমার

বিচারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত এপিএইচআর-অ্যামনেস্টির

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বিতাড়নের অপরাধে মিয়ানমারের বিচার করার এখতিয়ার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রয়েছে বলে নেওয়া সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে এপিএইচআর (আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস) ও মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গতকাল শুক্রবার সংস্থা দুটির পক্ষ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

আইসিসির সিদ্ধান্ত নিয়ে এপিএইচআর-এর সভাপতি ও মালয়েশিয়ার সংসদ সদস্য চার্লস সান্তিয়াগো বলেন, ‘এটি একটি মাইলফলক সিদ্ধান্ত এবং রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংস অপরাধের অভিযোগের জবাবদিহিতা আদায়ের পদক্ষেপ।’ জাকার্তা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সান্তিয়াগো বলেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে এখন রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক তাড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে কি না, সে বিষয়ে তদন্ত করার বিচারিক ক্ষমতা পেল আইসিসি।

ইন্দোনেশিয়ার সংসদ সদস্য ও এপিএইচআর’র বোর্ড সদস্য ইভা কুসুমা সুন্দরি বলেন, ‘মিয়ানমারে কয়েক দশক ধরে নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার জন্য এটি নিঃসন্দেহে কিছু আশা সৃষ্টি করবে। রোহিঙ্গা জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তের সুপারিশগুলোর দিকে আমরা তাকিয়ে আছি এবং আইসিসির আওতাধীন সব অভিযোগের জন্য দায়ীদের পূর্ণ তদন্ত ও বিচার সম্পর্কে আমরা আশাবাদী।’ আইসিসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, ‘আইসিসির এ সিদ্ধান্তে রোহিঙ্গাদের বিচার পাওয়ার পথ পরিষ্কার হয়েছে।’ মানবাধিকার সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের পরিচালক বিরাজ পাটনায়েক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘মিয়ানমার সেনাবাহিনী ভয়াবহ জাতিগত নিধন শুরুর পর সাত লাখ ২৫ হাজার রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ সিদ্ধান্ত (মিয়ানমারের বিচার) নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের বিচার পাওয়ার পথকে পরিষ্কার করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে যে জবাবদিহি করতে হবে, সে ব্যাপারে একটি পরিষ্কার বার্তা দিয়েছে আদালত।’

বিরাজ আরো বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যেসব অপরাধ ঘটানো হয়েছে তার একটি হচ্ছে তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করা। রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে কীভাবে সেনা অভিযানে হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, অনাহারে থাকতে বাধ্য করার পাশাপাশি গ্রামগুলো জ্বালিয়ে দেওয়া এবং স্থলমাইন ব্যবহার করা হয়েছে তার ব্যাপক তথ্যপ্রমাণ অ্যামনেস্টি সংগ্রহ করেছে।’ আইসিসির এ সিদ্ধান্তের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব যে এখনো ফুরিয়ে যায়নি, তাও স্মরণ করিয়ে দেন বিরাজ, ‘বিশেষ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের উচিত মিয়ানমারের পরিস্থিতি সম্পর্কে আইসিসিকে জানানো, যাতে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি কাচিন এবং শান রাজ্যে অন্যান্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী যেসব মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, সেসবের অনুসন্ধান করতে পারে।’

গত বৃহস্পতিবার হেগভিত্তিক আইসিসির তিন বিচারকের প্যানেলের এক লিখিত আদেশে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের মধ্য দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের যে অভিযোগ উঠেছে, তার বিচারের এখতিয়ার এ আদালতের রয়েছে। কেননা এ ঘটনায় সংঘটিত অপরাধ সীমান্ত পেরিয়ে সদস্য দেশ বাংলাদেশে বিস্তৃত হয়েছে।

এক মাস আগে জাতিসংঘের একটি স্বাধীন তথ্যানুসন্ধান মিশন তাদের প্রতিবেদনে বলে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও গণধর্ষণের মতো অপরাধ ঘটিয়েছে। এ জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান ও পাঁচজন জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের পূর্ণ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads