• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
খাদ্য সহায়তা পাবে ৩৭ জেলার সাত লাখেরও বেশি জেলে

মাছ ধরছেন জেলেরা

সংরক্ষিত ছবি

জাতীয়

খাদ্য সহায়তা পাবে ৩৭ জেলার সাত লাখেরও বেশি জেলে

৭ থেকে ২৮ অক্টোবর ইলিশ ধরা বন্ধ

  • নাজমুল হুসাইন
  • প্রকাশিত ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরণ বন্ধের সময় ৩৭ জেলার ৭ লাখ ৭ হাজার ৮৪৭ জেলেকে দেওয়া হবে খাদ্যসহায়তা। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য গত বছর ২৭টি জেলা নিষিদ্ধের আওতায় থাকলেও এ বছর সে আওতা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩৭টি। এ জন্য পরিবারপ্রতি ৪০ কেজি হারে বিতরণের লক্ষ্যে ২৮ হাজার ২১৩ টন চাল বরাদ্দ চেয়েছে মৎস অধিদফতর।

মৎস্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মাসুদ আরা মমি জানান, আগামী ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণের অংশ হিসেবে ইলিশ ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ থাকবে। শিগগির মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসবে। এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ইলিশের নিরাপদ প্রজননের জন্য ৩৭ জেলার সব নদ-নদী, সমুদ্র উপকূল এবং মোহনায় এই রুপালি মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকবে। সে সময় এ খাদ্যসহায়তা প্রদান করা হবে। প্রতিবছরের মতো এবারো এই সময়ের মধ্যে ইলিশ আহরণের পাশাপাশি দেশব্যাপী বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকবে। আইন অনুযায়ী এ সময় কোনো ব্যক্তি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ আহরণ করলে কমপক্ষে এক বছর থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডের সাজা হতে পারে।

আগে পূর্ণিমার সময় চন্দ্রনির্ভর আবর্তন অনুসরণ করে ১০-১১ দিন ইলিশ ধরা নিষেধ ছিল। কিন্তু ২০১৫ সালের পর এ মেয়াদ বাড়িয়ে ২২ দিন করা হয়। এতে আশ্বিন মাসের শেষে পূর্ণিমার আগের চার দিন, পূর্ণিমার দিন ও পূর্ণিমার পরের ১৭ দিনসহ মোট ২২ দিন ইলিশ আহরণ বন্ধ থাকে। গত কয়েক বছর এ উদ্যোগে বেশ সুফল মিলেছে।

এদিকে চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান বলেন, এ বছরের প্রেক্ষাপটে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর হবে ইলিশের ভরা মৌসুম। কারণ গত মাসের (আগস্ট) ২৬ তারিখে একটি পূর্ণিমা গেছে। আর এ মাস (সেপ্টেম্বর) ও পরের মাস অক্টোবরে একটি করে অমাবস্যা ও পূর্ণিমা পড়েছে। সে সময় ইলিশের ঢল নামবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে ইলিশ সাধারণত সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে অক্টোবরের শেষপর্যন্ত প্রজনন করে। সেপ্টেম্বরের শেষ ভাগে জিএসআই (ড়েহধফড় ঝড়সধঃরপ ওহফবী; জিএসআই— মাছের ডিমের ওজন ও দেহের ওজনের অনুপাতের শতকরা হার) ১০-১১ থেকে বেড়ে অক্টোবরের মাঝামাঝি কিংবা শেষের দিকে এসে সর্বোচ্চ ১৫-১৭ পর্যন্ত পৌঁছায় এবং নভেম্বরে এসে তা আবার হঠাৎ কমে যায়। ১৫-১৭ জিএসআই ইলিশের ভরা প্রজনন মৌসুম নির্দেশ করে। তবে জলবায়ু পরিবর্তন এবং নদীর স্রোত ও পানির তাপমাত্রা বৃষ্টির পরিমাণের ওপর ভিত্তি করেও ইলিশের প্রজননক্ষণ পরিবর্তিত হয়।

মৎস্য অধিদফতর জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার সময় প্রতিটি জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় মোবাইল কোর্ট বহাল রাখা হবে। এ বছর দেশে ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ থাকা জেলাগুলো হচ্ছে— ঢাকা, মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, রাজবাড়ী, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, টাঙ্গাইল, গোপালগঞ্জ, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খুলনা, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, জামালপুর, পাবনা, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা। এসব জেলার মোট ১৬১ উপজেলার নদ-নদী ও সমুদ্র উপকূল এবং মোহনায় এ বছর মা ইলিশ ডিম ছাড়বে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads