• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

এনজিওর বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ

  • মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার
  • প্রকাশিত ১৮ নভেম্বর ২০১৮

ঘোষণা অনুযায়ী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণ। একই সঙ্গে প্রত্যাবাসন স্থগিতে রোহিঙ্গাদের ‘উসকানি’ দেওয়ার জন্য বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে সেখানে কাজ করা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার কর্মীদের ভূমিকা ছিল। প্রত্যাবাসন না হওয়ার সুযোগ তারা এখন নেবে।

উখিয়া প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি রফুিকল ইসলাম বলেন, সেদিন আমি নিজে দেখেছি। নিজ দেশে না ফেরার দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিল তারা। তাদের হাতে ছিল নানা দাবি লেখা প্ল্যাকার্ড। সেগুলো দেখে বোঝা যায়, কথাগুলো তাদের কেউ শিখিয়ে দিয়েছিল। আমরা জেনেছি সেগুলো বিভিন্ন এনজিও কর্মীরাই করেছে। তিনি বলেন, আমরা মানবাধিকারের জায়গা থেকে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু আমাদের নিজেদের সমস্যাগুলোও দেখতে হবে। কিন্তু এনজিওগুলো সেটা বিচার করছে না। বিভিন্ন তহবিল আর কর্মসংস্থানের লোভে তারা প্রত্যাবাসনের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের উসকে দিয়েছে। রফিকুল ইসলাম এ ধরনের কাজে জড়িতদের কঠোর সাজার দাবি জানান।

কক্সবাজার সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর এমএ বারী বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন স্থগিত হয়ে যাওয়া স্থানীয়দের জন্য অশনিসংকেত। অল্প সংখ্যক হলেও প্রত্যাবাসন হওয়া জরুরি ছিল। মিয়ানমার প্রত্যাবাসন স্থগিত হওয়াকে বড় ইস্যু বানাতে পারে। তারা বলবে, আমরা প্রস্তুত থাকলেও বাংলাদেশ তাদের ফেরত পাঠায়নি।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গারা আমাদের ওপর বোঝা হয়ে চেপে থাকলে স্থানীয় জনগণের জন্য তা মোটেই মঙ্গলজনক হবে না।

রামু কলেজের অধ্যাপক আবু তাহের বলেন, যখন থেকে শুনেছি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হচ্ছে তখন থেকে একটি ভালো লাগা কাজ করছিল। কিন্তু হঠাৎ করে থেমে গেল সেটি। রোহিঙ্গারা নিজ দেশের তুলনায় শতগুণ বেশি সুযোগ সুবিধা বাংলাদেশে পাচ্ছে। এখানে তারা এখন ভাত-কাপড়ের পাশাপাশি কথা বলার সুযোগও পাচ্ছে। এই সুবিধা সহজে তারা ছাড়তে চাইবে না। তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য একটি দৃঢ় ও কৌশলী পদক্ষেপ নিতে হবে।

উখিয়া উপজেলার সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করতে না পারা দুঃখজনক। তাদের দাবি মেনে নেওয়া রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়। স্থানীয়দের জন্যও দিনে দিনে হুমকি হয়ে উঠছে তারা।

টেকনাফ উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আবুল হোসেন রাজু, টেকনাফের সাবেক কমিশনার আবদুল কুদ্দুস, স্কুলশিক্ষক শাহজাহান প্রত্যাবাসন স্থগিত হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এদিকে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. আবুল কালাম বলেন, এখনো সব কিছু শেষ হয়ে যায়নি। রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফিরতে চাইলেই প্রত্যাবাসন শুরু হবে।

৩০ অক্টোবর ঢাকায় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) বৈঠকে দুই দেশের কর্মকর্তারা নভেম্বরের মাঝামাঝি রোহিঙ্গাদের প্রথম দলের প্রত্যাবাসনের পরিকল্পনা করেন। সেই মোতাবেক গতকাল ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনের মধ্য দিয়ে কার্যক্রমটির শুরু হওয়ার কথা ছিল গত ১৫ নভেম্বর থেকে। তবে রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভের মুখে সে প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেয় বাংলাদেশ সরকার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads