• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
তাবলিগের বিরোধ ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে

কাকরাইল মসজিদ

সংরক্ষিত ছবি

জাতীয়

তাবলিগের বিরোধ ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে

বিরোধে যুক্ত দুই পক্ষ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮

তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিরোধে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে বিক্ষোভ। রাজধানীর অদূরে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গত শনিবার সংঘর্ষের পর দেশের বিভিন্ন জেলায় অসন্তোষ-বিরোধ চাঙ্গা হচ্ছে। ওইদিন টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে দু’পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত ও তিন শতাধিক মানুষ আহত হয়। গত কয়েকদিনে একাধিক জেলায় দু’পক্ষের সমর্থকরা বিক্ষোভ করেছে। দু’এক জেলায় সংঘর্ষের খবরও পাওয়া গেছে।

তাবলিগের আমির ভারতের মাওলানা সা’দ কান্ধলভীর একটি বক্তব্যে দু’পক্ষের এই বিরোধ শুরু। বাংলাদেশে সা’দ-বিরোধীদের সঙ্গে আছেন হেফাজতে ইসলামের সমর্থক ও কওমি মাদরাসার আলেমরা। আর সা’দ কান্ধলভীর পক্ষে আছেন তাবলিগ জামাতের নিয়মিত নেতাদের একাংশ। সা’দবিরোধীরা তাবলিগের এ বিরোধের বিষয়ে ভারতের বিখ্যাত দেওবন্দ মাদরাসার নির্দেশনা অনুসরণের দাবি করে আসছেন।

অন্যদিকে সা’দপন্থিদের বিচার দাবি চেয়েছে উলামা মাশায়েখ ও তাবলিগের সাথীরা। গতকাল বুধবার বিশ্ব ইজতিমায় হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করে টঙ্গী প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সা’দবিরোধীরা। তাদের দাবি, ইজতেমা ময়দানে

তাবলিগের বিরোধ ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে নিরীহ মাদরাসা ছাত্র ও তাবলিগের সাথীদের ওপর হামলার সময় প্রশাসনের ভূমিকা ছি৬ল নীরব ও রহস্যজনক। সেখানে পুলিশ দাঁড়িয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।

সংবাদ সম্মেলনে ৬ দফা দাবি জানানো হয়। ইজতিমা ময়দানে হামলার নির্দেশদাতা ওয়াসিকুল ইসলাম ও সাহাবুদ্দিন নাসিমসহ টঙ্গী ও উত্তরা থেকে নেতৃত্বদানকারী এবং হামলার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, হামলায় আহত-নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা, টঙ্গী ইজতেমা ময়দান শূরাভিত্তিক তাবলিগের সাথী ও ওলামায়ে কেরামের অধীনে হস্তান্তর, কাকরাইলের সব কার্যক্রম  থেকে ওয়াসিফ ও নাসিম গংদের বহিষ্কার, সারা দেশে ওলামায়ে কেরাম ও শূরাভিত্তিক পরিচালিত তাবলিগের সাথীদের পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা এবং টঙ্গীর আগামী বিশ্ব ইজতিমা পূর্ব ঘোষিত প্রথম ধাপ ১৮, ১৯ ও ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ইং এবং দ্বিতীয় ধাপ ২৫, ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ ইং তারিখে অনুষ্ঠানের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ।

জেলা থেকে পাওয়া খবরে দেখা গেছে, গত মঙ্গলবার সা’দবিরোধীরা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করেছে। পার্বতীপুরে ওই দু’পক্ষের সংঘর্ষে বাবা-ছেলেসহ তিনজন আহত হয়েছেন। গত  সোমবার রাতে এ সংঘর্ষ হয়। আহতরা হলেন সা’দ-সমর্থক নুরনবী, আকতার হোসেন ও তার ছেলে যোবায়ের হোসেন।

স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার সকালে ঢাকার সাভার থেকে তাবলিগ জামাতের ১৮ সদস্যের একটি দল পার্বতীপুরের শহীদ মিনারসংলগ্ন মসজিদে ওঠেন। এই দলটি ছিল সা’দ সমর্থকদের। খবর পেয়ে সা’দবিরোধী ৫০-৬০ সমর্থক ওই দিন রাতে তাদের মসজিদ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। বািবতণ্ডার একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা দিকে ঢাকার উত্তরায় বিক্ষোভ করে সা’দবিরোধীরা। ‘বৃহত্তর উত্তরার ওলামায়ে কেরাম এবং তাবলিগের সাথিদের’ ব্যানারে এই বিক্ষোভ মিছিল হয়। বিক্ষোভকারীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে মিছিল নিয়ে জসীমউদ্দীন বাসস্ট্যান্ড ঘুরে আবার আবদুল্লাহপুর গিয়ে সমবেত হন। পরে সেখানে সমাবেশ করেন তারা। এ সময় ওই রাস্তায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল ব্যাহত হয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।

মিছিল-সমাবেশে তারা হত্যা এবং হামলার বিচার, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা, যাদের হুকুমে ওই হামলা হয়েছে তাদের গ্রেফতার এবং ইজতেমা ময়দানের মসজিদের কার্যক্রম চালুর দাবি জানান। দাবি পূরণে সরকার ও প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টা সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়।

চট্টগ্রামে বিক্ষোভ

চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে গত মঙ্গলবার এক বিক্ষোভ সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, ইজতেমা মাঠে মুসল্লি হতাহতের দায় প্রশাসন এড়াতে পারে না। তাদের জবাবদিহি করতে হবে।

ওই দিন প্রশাসনের ভূমিকা রহস্যজনক উল্লেখ করে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, যথাযথভাবে ব্যবস্থা নিলে মানুষ হতাহত হতো না। এটি পরিকল্পিত হামলা উল্লেখ উসকানি দেওয়ার জন্য ওয়াসিফুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন ও ফরীদ উদ্দীন মাসঊদকে অভিযুক্ত করেন বাবুনগরী। হেফাজতে ইসলাম চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads