বিশ্ব ইজতেমার নেতৃত্ব নিয়ে দেশজুড়ে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। একের পর এক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে তারা। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিও পালন করছে। সংঘর্ষের ভয়ে তাবলিগে আসছেন না সাধারণ ‘সাথি’ ও বিদেশি মেহমানরা। তাবলিগ জামাতের মারকাজ রাজধানীর কাকরাইল মসজিদের সাথি ও মুসল্লিদের সংখ্যা অর্ধেকের চেয়ে কমে এসেছে। যারা চিল্লায় রয়েছেন তারাও দ্রুত ফেরার অপেক্ষায়।
তাবলিগের মুরব্বি মোবারক বলেন, প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি কাকরাইলের খেদমতে আছেন। আগে দৈনিক প্রায় ২০ বস্তা চাল লাগত, এখন লাগে ২-৩ বস্তা। আগে প্রায় ৪০টি জামাত বের হতো। এখন ৩-৪টি জামাত বের হয়। মুসলমানে মুসলমানে মারামারির কারণে মানুষ তাবলিগে আসছে না। এভাবে চললে তাবলিগ থেকে মুসলমানরা মুখ ফিরিয়ে নেবে।
তাবলিগের এক সাথি বলেন, প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমার আগে প্রায় ৫০টি দেশ থেকে তাবলিগের কর্মীরা আসতেন। দুই পক্ষের সংঘর্ষের কারণে বিদেশি মেহমানরা আসতে ভয় পাচ্ছেন। বর্তমানে কয়েকটি দেশের তাবলিগের কর্মীরা বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তারাও দ্রুত দেশে ফিরে যাবেন।
তাবলিগের একটি অংশ তাদের বিভিন্নভাবে হুকমি দিচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সম্প্রতি বিদেশি মেহমানদের পাসপোর্ট ও মালামাল আটকে দেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিদেশি মেহমানরা আসতে চাচ্ছেন না। এতে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এভাবে চললে একসময় বাংলাদেশ থেকে তাবলিগ চলে যাবে।
গত ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমার মাঠে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর জাতীয় নির্বাচনের আগে মাঠে ইজতেমাকেন্দ্রিক সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। নির্বাচনের পর মুরব্বিরা বসে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সে অনুযায়ী ইজতেমা হবে। তারপরও তাবলিগে আসছে না সাথিরা। গত বিশ্ব ইজতেমায় দিল্লির নেজামুদ্দিনের আমির মাওলানা সা’দ কান্ধলভীর অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে তাবলিগে বিরোধ দেখা দেয়। এর পর থেকে সা’দ অনুসারী মাওলানা সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম এবং সা’দবিরোধী মাওলানা যুবায়ের আহমেদের অনুসারীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব প্রকট হয়।