• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
অতিথি পাখির কোলাহলে মুখর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

অতিথি পাখি

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

অতিথি পাখির কোলাহলে মুখর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

  • কক্সবাজার প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৩ জানুয়ারি ২০১৯

কক্সবাজারের চকরিয়ায় অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের ডুলাহাজারার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের লেক। সাফারী পার্কের অভ্যন্তরে বন্যপ্রাণীর পানীয় জলের জন্য দুইটি কৃত্রিম হ্রদ রয়েছে।  প্রতিবছর শীতের মৌসুম আসলেই এ কৃত্রিম হ্রদে আগমন ঘটে হাজারো অতিথি পাখির।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পূর্ব পাশে ডুলাহাজারা রিজার্ভ ফরেস্টে মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য সম্বলিত বনাঞ্চলে এই সাফারী পার্কটি অবস্থিত। বর্তমানে এ পার্কের আয়তন ৯০০ হেক্টর।

জেলা সদর থেকে উত্তরে পার্কটির দূরত্ব ৫০ কিলোমিটার এবং চকরিয়া সদর হতে দক্ষিণে ১০ কিলোমিটার। প্রাকৃতিক শোভামণ্ডিত নির্জন উঁচু নিচু টিলা, প্রবাহমান ছড়া, হ্রদ, বিচিত্র গর্জন ও প্রাকৃতিক বৃক্ষ চিরসবুজে জানা-অজানা গাছ-গাছালি অপূর্ব উদ্ভিদ রাজির সমাহার ও ঘন আচ্ছাদনে গড়ে উঠেছে সাফারী পার্কটি।  শীত বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবছরের মতো চলতি বছরেও হাজারো অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে সাফারি পার্কের লেক পয়েন্টে। পার্কের লেকজুড়ে হাজার হাজার লাল পদ্মের মাঝে পাখিদের ওড়াউড়িতে চোখ জুড়িয়ে যায় পার্কে ভ্রমণে আসা দর্শনার্থীদের।

প্রতিবছর ডিসেম্বর মাসে হিমালয়ের উত্তরে শীত নামতে শুরু করে। ফলে উত্তরের শীত প্রধান অঞ্চল সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, চীন, নেপাল, জিনজিয়াং ও ভারত থেকে পাখিরা উষ্ণতার খোঁজে পাড়ি জমায় বিভিন্ন নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে। এসময় দক্ষিণ এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল দেশে হাজারো অতিথি পাখির আগমন ঘটে। বাংলাদেশের যেসব এলাকায় অতিথি পাখি আসে তার মধ্যে চকরিয়াস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক হলো অন্যতম।

পার্ক সূত্রে জানা যায়, শীত প্রধান দেশে যখন অতিরিক্ত শীত পড়া শুরু করে তখন অতিথি পাখির আগমন ঘটে সাফারি পার্কের এ লেকে। মূলত উড়ে আসা পাখি সাধারণত বিশ্রাম নেয় লেকের পানিতে ভাসতে থাকা পদ্ম ফুলের উপর। এ অতিথি পাখি গুলো হাঁস জাতীয় পাখি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উড়ে আসা অতিথি পাখির মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, পান্তামুখী, পাতারি, মুরগ্যাধি, পাতারী হাঁস, জলকুক্কুট, খয়রা ও কামপাখি রয়েছে। এছাড়া মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, বামুনিয়া হাঁস, লাল গুড়গুটি, নর্দানপিনটেল ও কাস্তেচাড়া প্রভৃতি পাখিও মাঝে মধ্যে দেখা মিলে এই লেকে। এরা ডানায় ভর করে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে চলে আসে এ অঞ্চলে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে ঘুরতে আসা হাটহাজারী এলাকার ওমান প্রবাসী দর্শনার্থী নজরুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ওমানে ছিলাম। এক সপ্তাহ আগে দেশে আসছি।  প্রবাসে থাকার কারণে ছেলে-মেয়ে নিয়ে তেমন কোথাও বেড়াতে যাওয়ার সুযোগটা হয়নি। ডিসেম্বর মাসে তাদের পরীক্ষা শেষ হওয়ার সুবাদে যে কয়েকদিন স্কুল বন্ধ রয়েছে এরই মধ্যে পরিবারের লোকজন নিয়ে ভ্রমনে বের হলাম। এরই মধ্যে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে ভ্রমনে এসে ছেলে-মেয়ে খুবই আনন্দিত হয়েছে। পার্কের ভেতরের জেব্রা বেস্টনির ধারে লেক পয়েন্ট এলাকায় অতিথি পাখিদের কিচিরমিচির শব্দটাই বেশি ভাল লাগছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রতিবছরই শীতের মৌসুম আসলে পার্কের ভেতরের লেকগুলোতে হাজার হাজার অতিথি পাখির আগমন ঘটে। বিশেষ করে যখন খুব বেশি শীত পড়ে তখন এসব পাখির দেখা মেলে পার্কের লেকে। অতিথি পাখির এ আগমনটা পার্কে আগত দর্শনার্থীদের বাড়তি বিনোদনের রূপ দিয়েছে।পাখি গুলো এক নজর দেখতে পর্যটকদের ভীড়ও বেড়েছে।

তিনি বলেন, পার্কের লেকে অতিথি পাখিদের যাতে দর্শনার্থীরা বিরক্ত না করে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লেখক: মাহাবুবুর রহমান,কক্সবাজার

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads