• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

প্রতিদিনের বই মেলা

ভালোবাসায় মুখরিত মেলা

  • সোহেল অটল
  • প্রকাশিত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

গতকাল ছিল বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এ উপলক্ষে অমর একুশে গ্রন্থমেলা ছিল মুখরিত। ভালোবাসার লাল পোশাকে সজ্জিত তরুণ-তরুণীরা গ্রন্থমেলা প্রাঙ্গণ ভরিয়ে তুলেছিল নিজেদের উপস্থিতি দিয়ে। সঙ্গত কারণে গ্রন্থমেলা কাল ছিল জমজমাট। কেনাবেচার হিসাবেও মেলা ছিল জমজমাট। প্রকাশকরা তৃপ্তি নিয়ে ঘরে ফিরেছেন কাল।

গতকাল বিকাল থেকেই দলে দলে মানুষ গ্রন্থমেলায় ঢুকতে শুরু করে। সেই অর্থে মেলার গেট খোলার পরপরই মেলা ভরে ওঠে। প্রতিটি স্টলেই দেখা গেছে ভিড়। পড়ুয়ারা বইয়ের ব্যাগ হাতে মেলা প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেছে।

বাংলা একাডেমির দেওয়া তথ্যমতে, গতকাল মেলায় নতুন বই এসেছে ১৪৭টি। এর মধ্যে গল্প ২৪, উপন্যাস ২৯, প্রবন্ধ ৬, কাব্যগ্রন্থ ৫০ ও অন্যান্য বিষয়ক গ্রন্থ ৩৮টি।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও বিজ্ঞানভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রেজাউর রহমান, আবদুল কাইয়ুম এবং অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান।

প্রাবন্ধিক বলেন, একুশ শতকে মনে রাখতে হবে, বিজ্ঞান সাক্ষরতা, বিজ্ঞানমনস্কতা, বৈজ্ঞানিক কাণ্ডজ্ঞান ও বিজ্ঞান গবেষণা আলাদা বিষয়। বিজ্ঞানমনস্কতা হলো বিজ্ঞানের দৃষ্টি দিয়ে সবকিছু ভাবা ও করা। বিজ্ঞানমনস্ক হতে হলে বিজ্ঞানী হতে হবে, এমন নয়, যেকোনো সচেতন মানুষ বিজ্ঞানমনস্ক হতে পারেন। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’ আমাদের প্রয়োজন বৈজ্ঞানিক কাণ্ডজ্ঞান, পরিশীলিত রুচিবোধ এবং বিচারবুদ্ধি ও মানবিক বোধশক্তিসম্পন্ন মানুষ। এই লক্ষ্য তিরোহিত হলে সমূহ বিপদ। অগ্রসরমানতার পথ তাতে বন্ধুর এবং বাধাগ্রস্ত হবে নিঃসন্দেহে। তিনি বলেন, আমাদের যত্নশীল হতে হবে শিক্ষামূলক কনটেন্টের প্রতি। আমরা আশা করি এ বিষয়ে গুণগত মান আরো বৃদ্ধি পাবে, বিজ্ঞান গবেষণায় প্রণোদনা যুগোপযোগী হবে, বৈশ্বিক মানের গবেষণা আমরা যাতে দেশেই করতে পারি সেই উদ্যোগ গৃহীত হবে, বিদেশে প্রশিক্ষিত বিজ্ঞান-গবেষক দেশেই থিতু হবেন, তারা রুচিশীল টেক্সট ও কনটেন্ট উপহার দেবেন— এরকম বাস্তবতা প্রতিষ্ঠিত হলে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ আর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’য় কোনো পার্থক্য থাকবে না। ডিজিটাল দুনিয়ায় আমরা গর্বিত জাতি হিসেবে আবির্ভূত হব— এমনই স্বপ্ন আমাদের।

আলোচকবৃন্দ বলেন, বাংলা ভাষা সাহিত্য ও বিজ্ঞান ভাবনা কোনো পরস্পরবিযুক্ত বিষয় নয় বরং আমাদের সাহিত্যে বিজ্ঞানের উপাদান জনমনে বিজ্ঞানবোধ সৃজনে ভূমিকা রেখেছে। সম্প্রতি ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিক ভবিষ্যৎ নির্মাণে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। তবে আমাদের কেবল প্রযুক্তিগত সমৃদ্ধিতেই সন্তুষ্ট থাকলে চলবে না বরং গোটা জাতির মাঝে বিজ্ঞানভিত্তিক ইহজাগতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা এখন বিশ্বব্যাপী আলোচিত হচ্ছে। আমরা আশা করি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশ এক্ষেত্রে আরো অগ্রগতি সাধন করবে। 

‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন আকিমুন রহমান, আনিসুল হক, রাহাত মিনহাজ, মাহবুব ময়ুখ রিশাদ এবং চাণক্য বাড়ৈ।

কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন কবি আমিনুর রহমান সুলতান এবং সাকিরা পারভীন। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী হাসান আরিফ এবং মাহিদুল ইসলাম । সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী খুরশিদ আলম, সুজিত মোস্তফা, তানভীর সজীব আলম, মুর্শিদুদ্দিন আহম্মদ, আঞ্জুমান আরা শিমুল, মো. রেজওয়ান আহমেদ।

আজকের অনুষ্ঠান

আজ শুক্রবার অমর একুশে গ্রন্থমেলার পঞ্চদশতম দিন মেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। মেলায় থাকবে শিশুপ্রহর। বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া সকাল ১০টায় অমর একুশে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে শিশুকিশোর সঙ্গীত প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বিকাল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী : শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মোহাম্মদ সাদিক, জাহিদ হায়দার এবং সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক সৈয়দ আকরম হোসেন। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads