সৌদি আরবের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সমঝোতা চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিসংক্রান্ত চুক্তিটি সই হয়। সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
‘ডিফেন্স কো-অপারেশন বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড সৌদি অ্যারাবিয়া’ নামের চুক্তিটিতে বাংলাদেশের পক্ষে সই করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর আমর্ড ফোর্সেস ডিভিশনের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান। সৌদির পক্ষে সই করেন দেশটির সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুতলাক বিন সালিম আল উজাইমিয়া। এ সময় দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া দূতাবাসের মিশন উপপ্রধান ড. মো. নজরুল ইসলাম ও ডিফেন্স অ্যাট্যাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ শাহ আলম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় সামরিক প্রশিক্ষণ, অনুশীলন ও শিক্ষা, সামরিক তথ্য ও গোয়েন্দা, প্রতিরক্ষা শিল্প, সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণ, পরিদর্শন ও দক্ষতা বিনিময়, সামরিক চিকিৎসা ও গবেষণা, ক্রীড়া, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সামরিক সদস্য বিনিময়, সমুদ্র নিরাপত্তা ও জলদস্যু দমনে দেশ দুটি একে অন্যকে সহযোগিতা করবে। তবে চুক্তিটি অবশ্যই পালনীয় নয়। অর্থাৎ চুক্তি হলেও এর সব ধারা মানতে বাধ্য নয় বাংলাদেশ। এ বিষয়ে গত বুধবার পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক জানান, চুক্তিতে তিনটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এগুলো হলো- অ্যাডভাইজরি, মাইন সুইপিং ও সিভিল কন্সট্রাকশন।
চুক্তির আওতায় সৌদি-ইয়েমেন সীমান্তবর্তী যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকায় মাইন অপসারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুটি ব্যাটালিয়নের প্রায় এক হাজার ৮০০ সেনা সদস্য অংশ নিতে পারেন। তবে জাতিসংঘ বাহিনীর অংশ হওয়া ছাড়া বিদেশের অন্য কোনো ক্ষেত্রে বা রণাঙ্গনে এ দেশের সেনাবাহিনী অংশ নেবে না। তবে ইসলাম ধর্মের সর্বোচ্চ তীর্থস্থান মক্কা বা মদিনায় হামলার ঘটনা ঘটলে জাতিসংঘ বাহিনী ছাড়াও সৈন্য পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে পারে বাংলাদেশ। এ ছাড়া সৌদির বিভিন্ন সামরিক, বেসামরিক অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নকাজে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অংশ নিতে পারে। চুক্তির আওতায় সেনাবাহিনীর অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের সে দেশে বিভিন্ন সামরিক খাতে নিয়োজিত করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
