• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
৫ টাকার গোলাপ ৫০

৫ টাকার গোলাপ ৫০

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

৫ টাকার গোলাপ ৫০

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

গোলাপ ছাড়া যেন ভালোবাসা দিবস কল্পনাই করা যায় না। অন্যান্য দিবসের তুলনায় এ দিবসটিতে গোলাপ ফুলের চাহিদা বহু গুণ বেড়ে যায়। পাইকারি ও খুচরা বাজারে এ সময় সরবরাহও থাকে প্রচুর। এই সুযোগে একেকটি গোলাপ চড়া দামে বিক্রি করেন দোকানিরা। তরুণ-তরুণীরাও নিরুপায়। ফলে চড়া দামেই গোলাপ কিনতে বাধ্য হন তারা। 

ফুল ব্যবসায়ীরা জানান, বছরের তিনটি দিন সব থেকে বেশি ফুল বিক্রি হয়। তার একটি হলো বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। বাকি দুটি হলো পহেলা ফাগুন এবং একুশে ফেব্রুয়ারি। তাদের মতে, সারা বছর যে ফুল বিক্রি হয়, শুধু ফেব্রুয়ারি মাসেই প্রায় তার সমান বিক্রি হয়। এই তিন দিবসে ফুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় ব্যবসায়ীরাও ভালো মুনাফা করার সুযোগ পান। যে কারণে ফেব্রুয়ারি মাসটির জন্য অধীর আগ্রহে থাকেন তারা।

রাজধানীতে ফুলের সব থেকে বড় বাজার শাহবাগ। গতকাল বৃহস্পতিবার শাহবাগের ফুল ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবছর পহেলা ফাগুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ব্যবসায়ীরা সম্মিলিতভাবে ৫-৭ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করেন। এর মধ্যে ভালোবাসা দিবসে সব থেকে বেশি বিক্রি হয় গোলাপ। যে কারণে অন্য ফুলের তুলনায় এদিন গোলাপের দাম বেশি থাকে। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে একটি গোলাপ বিক্রি হয়েছে ৩০-৫০ টাকায়। সাধারণ সময়ে যে ফুল দশ টাকায় পাওয়া যায়। গোলাপের পাশাপাশি বেড়েছে অন্য ফুলের দামও। রজনীগান্ধার স্টিক বিক্রি হয়েছে ১০-১৫ টাকায়। গাঁদা ফুলের একটি মালা ৩০-৫০, অর্কিড ৬০-৮০, লিলি ২৫০-৩০০, জারবেলা ৩০-৪০, কেলোনজরা ১০-১৫, ফুলের তোড়া ১০০-২০০, মাথার রিং ১০০-১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

শাহবাগে কথা হয় ফুল কিনতে আসা মাহমুদের সঙ্গে। তিনি বলেন, একটি গোলাপের দাম নিয়েছে ৩০ টাকা। পাঁচটি গোলাপ কিনেছি ৫০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও এখানে একটি গোলাপ আট-দশ টাকায় বিক্রি করেছে। দিবস হিসেবে ৩০ টাকা কমই নিয়েছে। কারণ ধারণা ছিল ৫০ টাকার নিচে গোলাপ পাওয়া যাবে না। টাকা একটু বেশি নিলেও কোনো ক্ষতি নেই। ‘ওকে’ তো গোলাপ উপহার দিতে পারব। আজকের দিনে গোলাপ না দিলে যে ভালোবাসায় থাকে না।

শাহবাগের ফুলের দোকানি আবুল কালাম বলেন, পহেলা ফাগুনে বেশ ভালো ব্যবসা হয়েছে। গতকাল (বুধবার) সব থেকে বেশি বিক্রি হয়েছে ফুলের তোড়া ও মাথার রিং। পাশাপাশি রজনীগান্ধার মালা, রক্তজবা ও চন্দ্রমল্লিকার সমন্বয়ে মালাও ভালো বিক্রি হয়েছে। এখানে ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে ফুলের ব্যবসা করছি। বরাবরই ১৪ ফেব্রুয়ারি গোলাপ ফুল সব থেকে বেশি বিক্রি হয়। এবারো ব্যতিক্রম হয়নি। ভোর থেকেই বিক্রি শুরু হয়েছে। তিনি ধারণা করেন, এই দুই দিনে শাহবাগে চার থেকে সাড়ে চার কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে।

শাহবাগে প্রায় ৫০টি ফুলের দোকান রয়েছে। প্রতিটি দোকানই কমপক্ষে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার ফুল বিক্রি করবে। যাদের দোকান বড় এবং মাল বেশি তারা আরো বেশি বিক্রি করবে। এই দুই দিনে দোকানদাররা প্রায় কোটি টাকা মুনাফা করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

গোলাপের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ভালোবাসা দিবসে গোলাপের প্রচুর চাহিদা থাকে। যে কারণে ফুল চাষিরাও দাম বাড়িয়ে দেন। বেশি দামে কেনার কারণে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। এ দিন গোলাপের চাহিদা যেমন, দামও তেমন।

আরেক দোকানের মালিক রুবেল বলেন, শাহবাগে সব থেকে বেশি ফুল বিক্রি হয় পহেলা ফাগুনে, বসন্ত উৎসবে। ভালোবাসা দিবসে বেশি বিক্রি হয় গোলাপ। এ দুই দিনে এখানকার দোকানগুলোতে ৫-৭ লাখ টাকার ওপরে ব্যবসা হয়। তিনি বলেন, আমরা যারা ফুলের ব্যবসা করি তাদের ভালোবাসা হলো ফুল। ব্যবসা ভালো হলে আমরা ভালো থাকি। তরুণ-তরুণীরা একে অপরকে গোলাপ দিয়ে ভালোবাসার জানান দেয়। ফুল বিক্রি করে মুনাফা করতে পারলে ফুলের প্রতি আমাদের ভালোবাসা বেড়ে যায়। পহেলা ফাগুন, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারিতে ফুল বিক্রি করে মুনাফা করলে সবার মাথাব্যথা শুরু হয়ে যায়। সাধারণত বছরের প্রায় প্রতিদিন অনেক ফুল ক্রেতার অভাবে নষ্ট হয়। সে সময় কিন্তু কেউ খোঁজ নেয় না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads