• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
আত্মগোপনে থাকা ইয়াবা কারবারিরা রেহাই পাবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

আজ শনিবার টেকনাফ হাই স্কুল মাঠে ইয়াবা কারবারীদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল

ছবি: বাংলাদেশের খবর

জাতীয়

আত্মগোপনে থাকা ইয়াবা কারবারিরা রেহাই পাবে না : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

  • কক্সবাজার প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

আত্মগোপনে থাকা ইয়াবা কারবারিরা রেহাই পাবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

আজ শনিবার টেকনাফ হাই স্কুল মাঠে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তালিকাভুক্ত ৩০ ইয়াবা গডফাদারসহ ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আত্মগোপনে থাকা ইয়াবাকারবারিরা রেহাই পাবে না। বাংলাদেশকে ইয়াবামুক্ত করা হবে। এটি সরকারের অস্ত্র ও মাদকবিরোধী অভিযানের চলমান প্রক্রিয়া। যারা আত্মসমর্পণের সুযোগ নিয়েছেন- এটা তাদের জন্য ভালো হয়েছে। যারা এই সুযোগ নেননি, তাদের ভয়াবহ পরিণতির সম্মুখীন হবে। আর যারা ঘাপটি মেরে আছেন তাদেরকেও আইনের  আওতায় আনা

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ দেশকে নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। কোনো মাদক বা ইয়াবা ব্যবসায়ীকে ছাড় দেওয়া হবে না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,  নাফ নদীসহ বাংলাদেশের কোথাও ইয়াবা পরিবহণ বা চুরাচালানের জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। আমরা স্পষ্ট ঘোষণা দিতে চাই বাংলাদেশে কোনো মাদক ব্যবসায়ীর স্থান হবে না।  বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের টার্গেট দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে তাই এখনো কোনো ধরনের অপরাধীর বিশেষ করে মাদকের মত ভয়াবহ জিনিসের স্থান হবে না।

স্থানীয় প্রশাসনের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যদি কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সীমান্ত দিয়ে কোনো প্রকার মাদক ও অবৈধ নাগরিক যাতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। এজন্য বিজিবিকেই সবচেয়ে বেশি দায়িত্বপালন করতে হবে।

আত্মসমর্পণকারীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, আপনারা আল্লাহ কাছে মাফ চান। আপনারা ভালো হয়ে যান। দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ গঠনে এগিয়ে আসুন। আর যারা এখনও আত্মসমর্পণ করেন নাই, তারা দ্রুত আইনের কাছে আত্মসমর্পণ করুন। না হলে ইয়াবা কারবারি যত বড় শক্তিশালি হোক না কেন তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার, জাফর আলম, আশেক উল্লাহ রফিক, সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সিরাজুল মোস্তফাসহ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা।

অনুষ্ঠানে ১০২ জন তালিকাভূক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন। এসব ইয়াবা কারবারিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের আইজি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। এসময় ইয়াবা কারবারিরা ৩ লাখ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা ও ৩০টি দেশীয় তৈরী আগ্নেয়াস্ত্র ও ৭০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ জমা দেন।

অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণকারী দুই ইয়াবা কারবারি তাদের অনুভূতি জানান। জীবনে আর কোনো দিন মাদক ব্যবসা করবেন না বলে ওয়াদা করেন এবং অন্যদেরও এই কারবারে না আসার অনুরোধ করেন।

অনুষ্ঠান শেষে আত্মসমর্পণকারিদের কক্সবাজার পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয় এবং প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা রুজু করে কারাগারে পাঠানোর কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তালিকায় কক্সবাজার ও টেকনাফের ১ হাজার ১৫১ জন মাদক ব্যবসায়ীর নাম আসে। এর মধ্যে ৭৩ জন শীর্ষ মাদক কারবারী বা পৃষ্ঠপোষকের নাম আছে। তালিকার মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিসহ তার পরিবারের ২৬ জন সদস্য রয়েছে। তাছাড়া টেকনাফ ও কক্সবাজার অঞ্চলের আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দলের নেতাদের নাম আছে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads