• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
শিগগিরই তুরাগ তীরের  স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু

লোগো বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)

জাতীয়

শিগগিরই তুরাগ তীরের  স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বুড়িগঙ্গা নদীর দুই তীর উদ্ধারে অভিযান প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর পরই তুরাগ তীর উদ্ধারে অভিযান শুরু হবে। এই নদের দুই তীরে ৪৪টি স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব স্পটে রয়েছে প্রায় আড়াইশ অবৈধ স্থাপনা। এসব অবৈধ স্থাপনার মধ্যে ২টি তিনতলা, ২টি  দোতলা, ৫০টি টঙঘর, ১০০ বালুমহাল ও ৫০টি দোকান। এই স্পটগুলোতে অভিযান সফল হলে উদ্ধার হবে ১৮ একর জমি।

অবৈধ তালিকাভুক্ত দখলদারদের চিহ্নিত করে ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর নৌ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুর হোসেন স্বাক্ষরিত ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি থেকে ঢাকা নদীবন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন বাবুবাজার ব্রিজ থেকে বুড়িগঙ্গা নদীর দ্বিতীয় চ্যানেলসহ নদীর উভয় তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৪৪টি স্পটের স্থানগুলো হলো মোহাম্মদপুর, সাভার, শ্যামপুর, রামচন্দ্রপুর, মিরপুর দারুসসালাম, সাভার বড়বরদেশী, কাউন্দিয়া সাভার, শাহআলী, নবাবেরবাগ শাহআলী ও গোড়ান চটবাড়ী রূপনগর এলাকা।

তুরাগ তীরের দুই পাড়ে খুব শিগগিরই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ সদরঘাট নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন। তিনি বলেন, ঢাকার চারপাশের নদী দূষণ ও দখল প্রতিরোধে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অব্যাহত থাকবে। এখনো অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা রয়েছে নদীর সীমার মধ্যে। নদী রক্ষাই আমাদের প্রধান কাজ। নদী বাঁচলে দেশ বাঁচবে।

তিনি আরো জানান, গত ২৯ জানুয়ারি থেকে তিন দফায় ৯ দিনে প্রায় দেড় হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উদ্ধার করা জায়গায় সীমানা পিলার স্থাপনবিষয়ক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।

 

নৌ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়- ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় বিস্তৃত বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা ও বালুর তীরভূমিতে পিলার স্থাপন, তীর রক্ষা, ওয়াকওয়ে ও জেটিসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো নির্মাণ (২য় পর্যায়) প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৪৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। প্রকল্পের পুরো অর্থই সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) থেকে জোগান দেওয়া হবে। বিআইডব্লিউটিএ এটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি গত জুলাইয়ে শুরু হয়ে ২০২২ সালের ৩০ জুন শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

এই প্রকল্পের আওতায় মোট ৫২ কিলোমিটার ওয়াকওয়ের  (হাঁটার রাস্তা) ৩৫ দশমিক ৫১ কিলোমিটারই নির্মিত হবে নদীর নিচু তীরভূমিতে। ১০ দশমিক ২৭ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে নদীর উঁচু তীরভূমিতে। ৫ দশমিক ৯২ কিলোমিটার নদীর তীরভূমিতে কলামের ওপর ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ৩০ কিলোমিটার হাঁটার সেতু নির্মাণ, ৪৪ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার তীররক্ষা কাজ, ১ কিলোমিটার ওয়াল নির্মাণ, ১ দশমিক ৫০ কিলোমিটার বেড়াসহ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, ৩টি ইকোপার্ক নির্মাণ, ১৯টি জেটি নির্মাণ এবং ১ হাজার ৮২০টি সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে বলে বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নদী দূষণ ও দখলদারদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। দখলদার যত শক্তিশালী হোক না কেন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। চারটি নদীর তীর উচ্ছেদ করে সীমানা পুনরায় নির্ধারণ করা হবে। এর জন্য ১০ হাজার সীমানা পিলার স্থাপন করা হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘নদী রক্ষা ও সীমানা পিলার স্থাপন বিষয়ে ৮৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে পরিকল্পনা কমিশন। এই প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে দুই বছর। এর মধ্যে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যার তীরে ৫০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। এছাড়া তিনটি ইকোপার্ক ও ২০টি জেটি নির্মাণ করা হবে।’

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads