রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক অভিবাসন প্রশাসনে ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের গুরুত্বারোপ করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক। গতকাল ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক জাতিসংঘের চলতি মাইগ্রেশন উইকে সাধারণ পরিষদের সভাপতি আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় প্যানেলিস্ট হিসেবে প্রদত্ত বক্তব্যে তিনি এই গুরুত্বারোপ করেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ সরকারের চূড়ান্ত বিবেচনাধীন জাতীয় অভিবাসন কাঠামোর বিষয়ে সভাকে অবহিত করেন।
তার আগে ফ্রেন্ডস অব মাইগ্রেশনের কো-চেয়ারদের আয়োজিত একটি ইভেন্টে সঞ্চালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব। সেখানে তিনি মিশ্র অভিবাসন, মানব পাচার, অনিয়মিত অভিবাসনসহ অভিবাসনের জটিল বিষয়গুলো নিরসনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় অভিবাসন কাঠামোর গুরুত্ব তুলে ধরেন। আইওএমের মহাপরিচালক অ্যান্তোনিও ভিতোরিনো, জাতিসংঘে নিযুক্ত আয়ারল্যান্ডের স্থায়ী প্রতিনিধিসহ সভাটিতে উপস্থিত সবাই পররাষ্ট্র সচিব উপস্থাপিত বাংলাদেশের এই ধারণার ভূয়সী প্রশংসা করেন। ইভেন্টটিতে আইওএমের মহাপরিচালক নবগঠিত জাতিসংঘ অভিবাসন ফোরামের অর্জিত সাংগঠনিক অগ্রগতি সম্পর্কে সদস্য রাষ্ট্রসমূহকে অবহিত করেন।
‘আন্তর্জাতিক অভিবাসন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক ইভেন্টটিতে প্যানেলিস্ট হিসেবে আরো অংশ নেন জাতিসংঘের ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চল সংক্রান্ত অর্থনৈতিক কমিশনের নির্বাহী সচিব মিজ অ্যালিসিয়া বার্সেনা, ইউরোপিয়ান কমিশনের সহযোগিতা ও উন্নয়নবিষয়ক মহাপরিচালক হেনরিএটি গেইজার, আন্তর্জাতিক মালিক সংস্থার (আইওই) মহাসচিব রবার্তো সুয়ারেজ-স্যান্তোস। অনুষ্ঠানটির মডারেটরের দায়িত্বে ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত স্পেনের স্থায়ী প্রতিনিধি আগুস্টিন স্যান্তোস।
এছাড়া ওইদিন সচিব সাধারণ পরিষদের সভাপতির সঙ্গেও বৈঠক করেন। এ সময় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি (পিজিএ) মারিয়া ফার্নান্দো এস্পিনোসা জলবায়ু পরিবর্তন, শান্তির সংস্কৃতি ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সক্রিয় নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন রিভিউ ফোরামের কো-ফ্যাসিলেটেটর হিসেবে বাংলাদেশকে মনোনীত করে বাংলাদেশের প্রতি তিনি যে আস্থা রেখেছেন তার জন্য সাধারণ পরিষদের সভাপতিকে ধন্যবাদ জানান পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক। পররাষ্ট্র সচিব আগামী মে মাসে কক্সবাজারে অনুষ্ঠিতব্য অভিবাসন সংক্রান্ত সম্মেলনে পিজিএকে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানান।
এর আগে গত বুধবার ইউএন ডেসা আয়োজিত এক্সপার্ট সিম্পোজিয়াম অন ইন্টারন্যাশনাল মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে অংশ নেন পররাষ্ট্র সচিব। এছাড়া গতকাল সন্ধ্যায় মিশনস্থ বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ‘অভিবাসন সপ্তাহ’ উপলক্ষে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন তিনি। বক্তব্যে বৈশ্বিক অভিবাসন কম্প্যাক্ট প্রণয়ন ও গ্রহণে সিভিল সোসাইটির তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
