• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
অসাধু ডিলারদের কাছে জিম্মি খুচরা ব্যবসায়ীরা

অটোরিকশা

সংরক্ষিত ছবি

জাতীয়

অটোরিকশা নিবন্ধন

অসাধু ডিলারদের কাছে জিম্মি খুচরা ব্যবসায়ীরা

  • আজাদ হোসেন সুমন
  • প্রকাশিত ০৯ মার্চ ২০১৯

সিএনজিচালিত থ্রি হুইলার অটোরিকশা নিবন্ধনের জন্য সরকার নির্ধারিত খরচের চেয়ে তিন গুণের বেশি অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে উত্তরা মোটরসের টাঙ্গাইলের ডিলার রাজধানীর মগবাজারস্থ বাংলাদেশ মোটরসের বিরুদ্ধে। এ কাজে উত্তরা মোটরসের বিক্রয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম খান ও ডেপুটি হেড অব সেলস নূরুদ্দীন জাহাঙ্গীর ইন্ধন জোগাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিএনজিচালিত অটোরিকশার সরকারি নিবন্ধন ফি ১৩ হাজার ২০০ টাকা, ট্রেজারি চালান দেড় হাজার, রেভিনিউ স্ট্যাম্প ৪০০ এবং বীমার জন্য খরচ ৫০০ টাকা। এ হিসাবে মোট খরচ দাঁড়ায় ১৫ হাজার ৬০০ টাকা।

কিন্তু মগবাজারের বাংলাদেশ মোটরস সাধারণ অটোরিকশা ক্রেতাদের কাছে অটোরিকশা বিক্রির পর নিবন্ধনের জন্য কখনো ৪২ কখনো ৪৫ আবার কখনো ৪৮ হাজার টাকা দাবি করছে। বিআরটিএর ঝামেলা এড়াতে অনেকেই এই টাকা গুনছেন। তবে বেশিরভাগ ক্রেতার অভিযোগ, তাদের উত্তরা মোটরসের দোহাই দিয়ে বাধ্য করা হচ্ছে টাকা দিতে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশ মোটরসের প্রকৃত ঠিকানা টাঙ্গাইল। তারা উত্তরা মোটরস থেকে অটোরিকশা কিনে টাঙ্গাইলে বসে বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু মগবাজার মোড়ের দিগন্ত এন্টারপ্রাইজে বসে অটোরিকশা বিক্রি ও নিবন্ধনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি ক্রেতাদের টাঙ্গাইলের মানি রিসিপ্ট (ক্রয় রসিদ) দেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, বাংলাদেশ মোটরসের স্বত্বাধিকারী রাজীব খানের সঙ্গে অটোরিকশা ক্রেতাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি চলছে। কারো অভিযোগ, মাত্রাতিরিক্ত টাকা নিয়েও অটোরিকশা সরবরাহ করছে না। আবার কেউ বলছেন, সরকারি নিবন্ধন ফি’র তিন গুণ বেশি টাকা আদায় করছে তারা। জুরাইনের অটোরিকশা ব্যবসায়ী রেজাউল করিম, যাত্রাবাড়ীর ব্যবসায়ী জাকির হোসেন, মিরপুরের পাপ্পু, খিলগাঁওয়ের ফারুক হোসেন, মোহাম্মদপুরের আবদুর রহিম ও জীবন, পলাশীর বাচ্চুসহ অনেকেরই একই অভিযোগ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ মোটরসের স্বত্বাধিকারী রাজীব খান বলেন, সরকারি চাকরি নিতে মানুষ ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা খরচ করছে। আর বিআরটিএ অফিস থেকে অটোরিকশা নিবন্ধন করিয়ে এনে কিছু বেশি টাকা নিতে সমস্যা কোথায়। এ ছাড়া উত্তরা মোটরসের নূরুদ্দীন জাহাঙ্গীর ও সাইফুল ইসলামকেও একটা টাকার অংশ দিতে হয়। যে কারণে কিছু বাড়তি টাকা নিতে হচ্ছে।

ঢাকায় বসে টাঙ্গাইলের গাড়ি বিক্রি প্রসঙ্গে বলেন, ঢাকায় তাদের শোরুম রয়েছে সেখানে বসে তারা বিক্রি করছেন। অথচ বাংলাদেশ মোটরস শোরুমে বসেই অটোরিকশা বিক্রি করতে দেখা গেছে তাদের। ছোট একটি দোকান হলেও ওই প্রতিষ্ঠানের সামেন সাইনবোর্ড রয়েছে চারটি। এগুলো হলো এলপিজি অটো বাংলাদেশ, পিয়াজিও কমার্সিয়াল ভেহিকেল, দিগন্ত এন্টারপ্রাইজ ও বাংলাদেশ মোটরস।

এর পাশেই সুলতান মোটরস ও দ্বিন ইসলাম মোটরসে গিয়ে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেলেও সেখানে বাড়তি টাকা নিয়ে কোনো ঝামেলা লক্ষ করা যায়নি।

এ বিষয়ে উত্তরা মোটরসের কর্মকর্তা নূরুদ্দীন জাহাঙ্গীর কথা বলতে রাজি হননি। বিক্রয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেছেন, তারা শুধু ডিলারদের কাছে অটোরিকশা বিক্রি করেন। বাংলাদেশ মোটরস টাঙ্গাইলের ডিলার। নিবন্ধন নিয়ে যদি কেউ বাড়তি টাকা নেয় তা বিআরটিএ দেখবে। কোনো ডিলারকে বাড়তি টাকা নেওয়ার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

এদিকে নিবন্ধন নিয়ে এমন বাড়তি টাকা প্রসঙ্গে বিব্রত বিআরটিএর কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, এটা কখনো হতে পারে না। উত্তরা মোটরস অটোরকিশা আমদানি করে ডিলারদের কাছে সরবরাহ করে। ডিলাররাই সাধারণ ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন। আর নিবন্ধন করে দেয় বিআরটিএ। কোনো ডিলার বাড়তি টাকা নিলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads