• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
‘জাহালম’ চলচ্চিত্র নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা চাইবে দুদক

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

‘জাহালম’ চলচ্চিত্র নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা চাইবে দুদক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ মার্চ ২০১৯

বিনা অপরাধে তিন বছর কারাভোগ করা জাহালমকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আজ মঙ্গলবার আদালতে আবেদন করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিচারাধীন অবস্থায় তাকে নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করলে মামলাটির বিচারকাজ ও তদন্তে প্রভাব পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী।

দুদকের প্রধান কৌঁসুলি খুরশীদ আলম খান জানান, সম্প্রতি দুটি সংবাদপত্রের খবরে এসেছে জাহালমের জীবনের গল্প নিয়ে সিনেমা বানাতে যাচ্ছেন কোনো এক চলচ্চিত্র নির্মাতা। এখানে দুদকের আপত্তি হচ্ছে। জাহালমের ঘটনাটি এখনো বিচারাধীন। ফলে সাবজুডিস কোনো বিষয় নিয়ে সিনেমা হতে পারে না। সংশ্লিষ্ট আদালতের অনুমতি নিয়ে মঙ্গলবার হলফনামা আকারে আবেদন দাখিল করা হবে।

জানা যায়, জাহালমের জীবনের এই গল্প নিয়েই চলচ্চিত্র নির্মাণের সিদ্ধান্তের কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানিয়েছেন মারিয়া তুষার নামে এক নির্মাতা। এরই মধ্যে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিতে নাম নিবন্ধন করেছেন এই পরিচালক। সিনেমার নামও রেখেছেন ‘জাহালম’। এই ছবিতে জাহালমের চরিত্রে অভিনয় করবেন রিয়াজুল রিজু।

এ প্রসঙ্গে নির্মাতা মারিয়া তুষার বলেন, জাহালমের দুঃখের জীবনের সংবাদটা ছিল সাড়া জাগানো। তার সাক্ষাৎকার দেখার পর মনে হলো, এটি নিয়ে কাজ করা উচিত। আমার কাছে ব্যাপারটি স্পর্শকাতরও মনে হয়েছে। জাহালমের জীবনী নিয়ে ছবি বানাতে চলতি মাসেই তার সঙ্গে দেখা করার কথা জানিয়েছেন পরিচালক।

তবে নিজের নামে চলচ্চিত্র নির্মাণের কথা জানতেন না জাহালম। গণমাধ্যমের কাছ থেকেই তিনি জানতে পারেন। এ বিষয়ে জাহালম বলেন, ব্যাপারটি ভালোই লাগছে। মিথ্যা মামলায় আমি অনেক কষ্ট করছি। আমার জীবনের সেই কষ্টের কথা সিনেমায়ও দেখা যাবে। এতে আমি অনেক বেশি আনন্দিত। জাহালম চান, তার মতো কেউ যেন বিনা দোষে এমন শাস্তি না পান। আর এ বিষয়টি যেন ছবিতে থাকে তার দাবি। এই চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করছে নির্মাতার প্রতিষ্ঠান মারিয়া তুষার ফিল্মস।

সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় নিরপরাধ পাটকল শ্রমিক জাহালমকে প্রকৃত আসামি আবু সালেক হিসেবে চিহ্নিত করে ২৬টি মামলা করে দুদক। পরে ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি জাহালমকে গ্রেফতার করা হয়।

বিনা অপরাধে তিন বছর ধরে জেলে থাকা জাহালমকে নিয়ে একটি দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী হাইকোর্টের নজরে আনেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি আদালত জাহালমকে মুক্তির নির্দেশ দেন। এরপর কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান জাহালম।

জাহালমকাণ্ডে দুদকের করা সব মামলার প্রাথমিক তথ্যবিবরণী (এফআইআর), অভিযোগপত্রসহ (সিএস) যাবতীয় নথি চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১০ এপ্রিল তা আদালতে নিয়ে আসতে দুদকের প্রতি নির্দেশ রয়েছে।

টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার ধুবুড়িয়া গ্রামের জাহালম নরসিংদীর একটি পাটকলে শ্রমিকের কাজ করতেন। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে সেখানেই থাকতেন তিনি। ২০১৬ সালে দুদকের এক মামলার আসামি ‘আবু সালেক’ হিসেবে গ্রেফতার করা হয় জাহালমকে।

জাহালমের ভাষ্য, তখন তিনি বার বার বলছিলেন যে তিনি সালেক নন, কিন্তু তাতে কান দেননি দুদক কর্মকর্তারা। পরে ‘আবু সালেক’ হিসেবেই কারাভোগ করেন এ নিরপরাধ যুবক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads