• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
নদী বাঁচাতে ১০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনার খসড়া চূড়ান্ত

স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম

সংরক্ষিত ছবি

জাতীয়

নদী বাঁচাতে ১০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনার খসড়া চূড়ান্ত

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৮ এপ্রিল ২০১৯

নদী বাঁচাতে ১০ বছর মেয়াদি একটি মহাপরিকল্পনার খসড়া চূড়ান্ত করেছে সরকার। ঢাকার চারপাশের নদীগুলো ছাড়াও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী দখল ও দূষণমুক্ত করে নাব্য ফেরানো হবে। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে এ সংক্রান্ত কমিটির সভায় খসড়া চূড়ান্ত হয় বলে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন।

সভা শেষে মন্ত্রী বলেন, উন্নত বাংলাদেশ গড়তে হলে গ্রাম-গঞ্জের সকল মানুষের কাছে উন্নয়নের সব সুবিধা পৌঁছাতে হবে। তেমনি নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদীগুলোকে দূষণমুক্ত করতে হবে। ফিরিয়ে আনতে হবে নাব্য। নদীগুলোকে দখল-দূষণমুক্ত করে নাব্য ফেরাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটিতে পদাধিকারবলে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী। বলেন, কমিটি ইতোমধ্যে একটি খসড়া মাস্টার প্ল্যান করেছে। সেই প্ল্যানের ওপর আলোচনা করে নীতিগতভাবে অনুমোদন করা হয়েছে। একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে। অনুমোদিত খসড়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে উনার অনেক আন্তরিকতা রয়েছে। তিনি এটাকে অনেক গুরুত্ব দেন। যদি কোথাও কিছু সংযোজন বা বিয়োজন করার দরকার মনে করেন, তিনি সেটা করবেন। এই মাস্টার প্ল্যানকে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম, স্বল্প মেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনায় ভাগ করা হয়েছে। তবে আমারা ১০ বছরের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করতে চাই।

প্রাথমিকভাবে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চলছে। ইতোমধ্যে নদী দখলমুক্ত করার কাজ শুরু হয়েছে। ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে। ওয়াসার নেতৃত্বে স্যানিটেশনের কাজ শুরু হচ্ছে। দূষিত পানি যেন নদীতে না যায় সেজন্য ঢাকার স্যুয়ারেজ লাইনও ঠিক করা হবে। বর্জ্য নিয়েও আমাদের পরিকল্পনা আছে। বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে কাজ করছি। ফলে নদীতে ও এখানে-সেখানে বর্জ্য আর ডাম্প হবে না। 

১০ বছরের মধ্যে নাব্য ফিরিয়ে আনতে নদীগুলোতে ড্রেজিং করতে হবে। পলি পড়ে নদীর বেডগুলো উঁচু হয়ে গেছে, সেগুলোকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে হবে। দূষণ মুক্ত করতে পানি ট্রিট ও পানিতে আর যাতে দূষিত পদার্থ না যায় সেজন্য উৎসগুলো বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি গৃহস্থলী ও শিল্প বর্জ্য যাতে  নদীতে না যায়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে কি পরিমাণ ব্যয় হবে তা ওয়ার্কিং গ্রুপ নির্ধারণ করবে। মন্ত্রী বলেন, ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজগুলো ভাগ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবে। ইতোমধ্যে সেই কাজ শুরু হয়েছে।

ঢাকার চারপাশের চার নদীসহ দেশের সকল নদ-নদী ও জলাশয় রক্ষায় বিভিন্ন সময়ে আদালতের রায় এলেও সেগুলো দখল ও দূষণ বন্ধ করা যায়নি। এই প্রেক্ষাপটে গত মার্চে এক রিট মামলার রায়ে ঢাকার তুরাগ নদকে ‘জীবন্ত সত্তা’ ঘোষণা করে দেশের সকল নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয়কে রক্ষার জন্য জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে ‘আইনগত অভিভাবক’ ঘোষণা করে হাইকোর্ট নদী দখলকারীদের নির্বাচন করার ও ঋণ পাওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করে।

নদী রক্ষা কমিশন যাতে নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয় রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, সেজন্য আইন সংশোধন করে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করতে বলা হয় সরকারকে। এছাড়া রায়ে পাশাপাশি জলাশয় দখলকারী ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদের তালিকা প্রকাশ, স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সব নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয়ের ডিজিটাল ডেটাবেইজ তৈরি এবং সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প কারখানায় নিয়মিত সচেতনতামূলক কর্মসূচি নিতে বলা হয়।  

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads