দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপনের পদ্মা সেতুর ১১তম স্প্যানটি ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সেতুর ১ হাজার ৬৫০ মিটার এখন দৃশ্যমান। পদ্মা সেতু প্রকল্পের এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে জাজিরা প্রান্তে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ওই স্প্যানটি বসানো হয়।
এ ছাড়া গত বছরের মাওয়া পয়েন্টে ৪ ও ৫ নম্বর পিলারের ওপর আরো একটি স্পেন বসানো হয়।
সেতু বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর জানান, মঙ্গলবার পদ্মা সেতুর ১১তম স্পেনটি বসানো হয়েছে। এতে জাজিরা প্রান্তে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ১৬৫০ মিটার। এ মাসে দুটি স্প্যান বসানো হলো। আগামী মাসে দুটি স্পেন বসানো হবে। ইতোমধ্যে সেতুর প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যে সবকটি স্পেন বসিয়ে সেতুটি দৃশ্যমান করে তুলাবো বলে আশা করছি।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে গোটা দেশের যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে। দেশের অর্থনীতিতে নতুনমাত্রা যোগ হবে। পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে গড়ে উঠবে বিশ্বমানের শহর। কলকারখানায় ভরে উঠবে এ এলাকা। শ্রমজীবী মানুষের ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
সর্বক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে বলে আশা করছেন পদ্মা পাড়ের মানুষ। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রায় সাত কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে এ সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে।
দোতলা এ সেতুর নিচতলায় চলবে ট্রেন। স্থাপন করা স্পেনগুলোয় এখন রেলের স্লাব বসানোর কাজ চলছে। জাজিরা প্রান্তের স্পেনগুলোয় ১২৮টি স্লাব বসানো হয়েছে। পুরো সেতুর দুই হাজার ৯৫৯টি স্লাব বসানো হবে। মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়াডে স্পেন ও স্লাব বসানোর কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে সে দেশেরই আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে সেতুর কাঠামো।