• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
দেশে দারিদ্র্য কমলেও বৈষম্য বেড়েছে

ফাইল ছবি

জাতীয়

দেশে দারিদ্র্য কমলেও বৈষম্য বেড়েছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৫ মে ২০১৯

দেশে দারিদ্র্যের হার কমেছে; কিন্তু সম্পদের বৈষম্য বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত সর্বশেষ খানা আয় ও ব্যয় জরিপে এ চিত্র ফুটে উঠেছে।

২০১৬-এ চালানো এ জরিপের চূড়ান্ত হিসাব গত সোমবার প্রকাশ করে বিবিএস। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জরিপের চূড়ান্ত তথ্য তুলে ধরেন বিবিএসের মহাপরিচালক কৃষ্ণা গায়েন। বিবিএসের পরিচালক জিয়া উদ্দিন আহমেদ এবং খানা আয় ও ব্যয় জরিপের প্রকল্প পরিচালক ড. দীপঙ্কর রায়ও উপস্থিত ছিলেন।  সংস্থাটির ২০১৮ সালের প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে দারিদ্র্যের হার কমে হয়েছে ২১ দশমিক ৮ শতাংশ। আর হতদরিদ্রের হার কমে হয়েছে ১১ দশমিক ৩ শতাংশ।

সংস্থাটির দারিদ্র্য হারের প্রাক্কলিত হিসাব অনুযায়ী গত দুই বছর আগেও একই চিত্র ছিল। ২০১৭ সালের অক্টোবরে ওই জরিপের প্রাথমিক ফলাফলেও একই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল।

বিবিএসের মহাপরিচালক কৃষ্ণা গায়েন বলেন, যখন দেশে দারিদ্র্য হার বেশি ছিল তখন বেশি হারে দারিদ্র্য কমানো সম্ভব হয়েছে। এখন দারিদ্র্যের সংখ্যা বা পকেট কমে যাওয়ার কারণে দারিদ্র্য নির্মূল করা কঠিন হয়েছে। তাই দারিদ্র্য কমার প্রবণতাও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কমেছে। তবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করা সম্ভব হবে বলে আশার কথা জানান তিনি।

কৃষ্ণা গায়েন বলেন, খানা আয় ও ব্যয় নির্ধারণ জরিপের প্রাথমিক ফলাফলের সঙ্গে চূড়ান্ত ফলাফলে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। দেশে দারিদ্র্যের হার ক্রমান্বয়ে কমছে। উচ্চ দারিদ্র্য রেখা অনুযায়ী দারিদ্র্যের হার ২০০৫ সালে ছিল ৪০ শতাংশ এবং ২০১০ সালে ছিল ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ । ২০১৬ সালে এ হার কমে হয় ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ।

অন্যদিকে ২০০৫ সালে হতদরিদ্রের হার ছিল ২৫ দশমিক ১ শতাংশ, যা ২০১০ সালে ১৭ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসে। ২০১৬ সালে এ হার আরো কমে হয়েছে ১২ দশমিক ৯ শতাংশ।

২০০৫ সালে উচ্চ দারিদ্র্য রেখা অনুযায়ী দারিদ্র্যের গভীরতা ও তীব্রতা ছিল যথাক্রমে ৯ শতাংশ এবং ২ দশমিক ৯ শতাংশ । ২০১৬ সালের জরিপে দেখা যায় দারিদ্র্য গভীরতা ৫ ও তীব্রতা ১ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসেছে।

দারিদ্র্যর গভীরতা হলো- দারিদ্র্য রেখা ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সঙ্গতির গড় ব্যবধান। দারিদ্র্যের তীব্রতা বলতে বোঝানো হয়, দারিদ্র্য রেখা ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর গড় ব্যবধানের মাত্রা।

খানা আয় ও ব্যয় জরিপ ২০১৬ থেকে সম্পদ ও দেশের আঞ্চলিক বৈষম্যের চিত্র পাওয়া যায়, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন অর্থনীতিবিদরা।

বিবিএসের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশের সব মানুষের যত আয়, এর মাত্র ১ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ আয় করেন সবচেয়ে গরিব ১০ শতাংশ মানুষ। ছয় বছর আগেও মোট আয়ের ২ শতাংশ এই শ্রেণির মানুষের দখলে ছিল।

অন্যদিকে সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশ মানুষের আয় মোট আয়ের ৩৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। ছয় বছর আগে এর পরিমাণ ছিল ৩৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। জরিপে আরো বলা হয়েছে, দেশের মোট আয়ের দুই-তৃতীয়াংশের মালিক ওপরের দিকে থাকা ৩০ শতাংশ মানুষ। জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশের দারিদ্র্যপ্রবণ কুড়িগ্রাম জেলায় দারিদ্র্যের হার এখনো ৭০ দশমিক ৮ শতাংশ। এছাড়া বান্দরবানে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ, রাঙ্গামাটিতে ৬৪ শতাংশ। এছাড়া এ জরিপে নতুন দারিদ্র্যে পকেট হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে দিনাজপুর ও মাগুরা। এ দুই জেলায় দারিদ্র্য হার যথাক্রমে ৬৪ দমমিক ৩ শতাংশ এবং ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ। কিশোরগঞ্জে দারিদ্র্যের হার ৫৩ দশমিক ৫ শতাংশ।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads