• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
৩২ লাখ প্রাথমিক শিক্ষার্থী পাবে রান্না করা খাবার

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

৩২ লাখ প্রাথমিক শিক্ষার্থী পাবে রান্না করা খাবার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ মে ২০১৯

সারা দেশের ১০৪টি উপজেলার সবগুলো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুরে রান্না করা খাবার দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। জাতীয় স্কুল মিল নীতি অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে প্রায় ৩২ লাখ শিক্ষার্থীকে এর আওতায় আনা হবে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফও) সহযোগিতায় জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা, বান্দরবানের লামা উপজেলা, বরগুনার বামনা উপজেলায় ২০১৩ সালে এ প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে চালু করা হয়। বর্তমানে দারিদ্র্যপ্রবণ এলাকার সব সরকারি প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রকল্পটি চালু করতে চায় সংস্থাটি।

এদিকে আগামী জুলাই থেকে আরো ১৬টি উপজেলায় চালু হবে দুপুরের খাবার দেওয়ার এই কর্মসূচি। পরে এর আওতায় আসবে ১০৪টি উপজেলার সবগুলো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, ১৬টি উপজেলায় প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি দেখে বাকি উপজেলাগুলোর জন্য ছক কষা হবে। আগামী বছরের মধ্যে এসব প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের আশা করেন তিনি।

অন্যদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ কোটির বেশি। এর মধ্যে দারিদ্র্যপ্রবণ ১০৪টি উপজেলায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩২ লাখের মতো। এসব উপজেলায় স্কুল মিল নীতি বাস্তবায়ন করতে গেলে বছরে ৮ হাজার কোটি টাকা লাগবে বলে হিসাব করেছে মন্ত্রণালয়।

আকরাম হোসেন আরো বলেন, আমরা ৮ হাজার কোটি টাকা চেয়েছি। সারা দেশে বাস্তবায়ন করতে গেলে এই টাকাটা লাগবে। তবে সরকারি সহযোগিতা ছাড়াও বেসরকারি পর্যায় থেকে কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে তাও আমরা নেব।

জাতীয় স্কুল মিল নীতির দায়িত্বে থাকা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব বাজেট থেকে প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। অর্থ বিভাগও এ প্রকল্পে অর্থ দেবে।

স্কুল মিল নীতি প্রকল্পের ওপিডি নূরুন্নবী সোহাগ জানান, সরকারি প্রাথমিক স্কুলে দুপুরের খাবার দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীপ্রতি ১৬ টাকা খরচ হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের অধীনে একটি সেল বা ইউনিট গঠন করা হবে। কার্যক্রমের পরিধি সম্প্রসারণে একটি পৃথক জাতীয় স্কুল মিল কর্মসূচি কর্তৃপক্ষ গঠনের চিন্তাও রয়েছে। এছাড়া বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কারিগরি সহায়তায় বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে পরে একটি খাদ্য ও পুষ্টি গবেষণা উন্নয়ন কেন্দ্র গঠন করবে মন্ত্রণালয়।

সামগ্রিক বিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, পুষ্টিকর খাদ্য দিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। আট হাজার কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় অর্থায়নের সুযোগ রয়েছে। শিশুদের পেছনে এক ডলার বিনিয়োগ করলে আঠারো ডলার ফেরত পাওয়া যায়। স্কুল ফিডিংয়ের মাধ্যমে অপুষ্টির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মত তার।

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, শিশুদের জন্য বিনিয়োগে কোনো ক্ষতি নেই। এই বিনিয়োগে জাতি, ধর্ম, বর্ণ কোনো কিছুই থাকা উচিত নয়।

উল্লেখ্য, বর্তমানে সারা বিশ্বে ৩৭০ কোটি শিশুর মধ্যে মাত্র ১৮ কোটি শিশুকে স্কুল মিল দেওয়া হয়। বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রায় পৌনে দুই কোটি শিশুর মধ্যে প্রায় ৩২ লাখ শিশুকে স্কুল ফিডিংয়ের আওতায় আনা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads