• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভারতের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির আহ্বান

মাওলানা মো. আবদুুল লতিফ নেজামী

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভারতের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির আহ্বান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ মে ২০১৯

বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মাওলানা মো. আবদুুল লতিফ নেজামী বলেছেন, পানির ব্যাপারে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষা না হওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রাখতে হবে। ভারতের পানি আগ্রাসনের ফলে সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলা, নদী-মেঘলা বাংলাদেশে আজ মরুকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

ফারাক্কা দিবস উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পুরানা পল্টনে মাওলানা আতহার আলী (রহ.) মিলনায়তনে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি এ সভার আয়োজন করে।

আবদুল লতিফ নেজামী বলেন, ১৯৬৬ সনের হেলসিংকি নীতিমালা মোতাবেক প্রতিটি অববাহিকাভুক্ত দেশ, অভিন্ন নদীর ব্যবহারের ক্ষেত্রে অন্য দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রয়োজন বিবেচনা করতে হবে। এজন্য অন্য দেশের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। জাতিসংঘ নীতিমালা, ১৯৯৭ অনুযায়ী প্রতিটি দেশে আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহ থেকে পানি ব্যবহারের সময় পার্শ্ববর্তী একই অববাহিকার অন্যান্য দেশের যাতে কোনো ধরনের ক্ষতি না হয়, সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। ইউএনইপি  কনভেনশন অন বাইওলজিক্যাল ডাইভারসিটিজ, ১৯৯২ অনুযায়ী পৃৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশ বিশ্বের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি ভারতের পানি আগ্রাসনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, গঙ্গায় ফারাক্কা, তিস্তায় গজলডোবা, বরাকে টিপাইমুখ এবং ব্রহ্মপুত্রে যোগীর খোপা, সুবনশ্রী বাঁধ ছাড়াও ব্রহ্মপুত্রের উৎস মানস ও সংকোষের ওপর বাঁধ তৈরির কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে পানির অভাবে বাংলাদেশের হাওর, বিল, নিচু জলাভূমি শুকিয়ে যাবে এবং এ কারণে কৃষি, মাছ, খাবার পানি, নৌ চলাচল ইত্যাদি ভীষণভাবে ব্যাহত হওয়া শুরু হয়েছে, জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাবে এবং পরিবেশ তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলবে।

তিনি বলেন, ভারতের পানি আগ্রাসনে সৃষ্ট বিপর্যয়ের কথা বলিষ্ঠ ও তথ্যসমৃদ্ধভাবে সব আন্তর্জাতিক ফোরামে উত্থাপন করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ রোধের বিরুদ্ধে সোচ্চার আন্তর্জাতিক ফোরামের মধ্যে রয়েছে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক কোর্ট অব জাস্টিজ, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিভার্স নেটওয়ার্ক, হল্যান্ডভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার ট্রাইব্যুনাল ও থার্ড ওয়ার্ল্ড ওয়াটার ফোরাম প্রভৃতি।

আবদুল লতিফ নেজামী বলেন, ফ্রান্সের বিরুদ্ধে স্পেন, হাঙ্গেরির বিরুদ্ধে স্লোভাকিয়া, ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়ের করে নিজ নিজ দেশের পানির অধিকার আদায় করতে সক্ষম হয়েছে। তাছাড়া ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার আপত্তির মুখে লাওস মেকং নদীতে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের কাজ স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে। পানির ব্যাপারে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিকভাবে ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রাখতে হবে। এই আন্দালনে অংশগ্রহণের জন্য দেশে-বিদেশে অবস্থানরত প্রত্যেক বাংলাদেশির প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অধ্যাপক এহতেশাম সারোয়ার, মুফতি আবদুুর কাইয়ূম, মাওলানা আবুল হাছান তালুকদার প্রমুখ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads