• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
জামিন নিয়ে লাপাত্তা জঙ্গিদের খুঁজছে পুলিশ

জামিন নিয়ে লাপাত্তা জঙ্গিদের খুঁজছে পুলিশ

প্রতীকী ছবি

জাতীয়

জামিন নিয়ে লাপাত্তা জঙ্গিদের খুঁজছে পুলিশ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৮ মে ২০১৯

হঠাৎ দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশে জঙ্গিদের অপতৎপরতা দেখা দেওয়ায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে বাংলাদেশ এই ঝুঁঁকিতে নেই বলে মনে করছেন তারা। তবু অতিরিক্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে জঙ্গি দমনে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট ইউনিট। তারা সতর্কতার অংশ হিসেবে জামিনে বেরিয়ে লাপাত্তা হওয়া জঙ্গিদের অবস্থান শনাক্ত করতে তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।

পাশাপাশি যেকোনো ধরনের ঝুঁঁকি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি গ্রহণ করে সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন র্যাব-পুলিশের সদস্যরা। র্যাব ও পুলিশ সূত্রে পাওয়া তথ্য বলছে, ২০১৬ সালে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আর এ সময় তাদের হাতে গ্রেফতার হয় এক হাজারেরও বেশি বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য।

এই সদস্যদের মধ্যে এখন প্রায় চার শতাধিক জঙ্গি সদস্য জামিনে রয়েছেন। জামিনে থাকা এমন অনেক জঙ্গির অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কাছে।

এদিকে এসব ঘটনায় পুলিশ সদর দফতর থেকে বলা হচ্ছে, জামিনে বের হওয়া জঙ্গিদের চিহ্নিত করে, নজরদারির আওতায় আনতে হবে। সম্প্রতি ডিআইজি ও পুলিশ সুপারদের এ-সম্পর্কিত বিশেষ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট ও এলিট ফোর্স র‍্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, ‘জঙ্গিবাদ থেকে বর্তমান কোনো দেশই পুরোপুরিভাবে নিরাপদ নয়।’

 

র‍্যাব সদর দফতরের তথ্য বলছে, ২০১৬ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে ৫৮৪ জন জঙ্গি। এদের মধ্যে ১৬৭ জন জামিনে রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ রয়েছে ১৫৯ জন, নারী আটজন।

 

সংস্থাটি বলছে, মূল ধারার জঙ্গি বাদে বাইরে শুধু হিজবুত তাহরীরের জামিনে থাকা সদস্যদের সংখ্যা হবে প্রায় আট শতাধিক। তাই কোনো ধরনের ঝুঁঁকি না নিয়ে, জামিনে থাকা জঙ্গিদের ওপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি যেসব জঙ্গি লাপাত্তা, তাদের খুঁজে বের করা হচ্ছে।

অন্যদিকে সম্প্রতি আইএসের হয়ে যুদ্ধ করতে সিরিয়ায় যাওয়া এক জঙ্গিকে রাজধানী থেকে গ্রেফতার করেছে সিটিটিসি। গ্রেফতারের পর বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন ৩৩ বছরের মুতাজ আবদুল মজিদ কফিল।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সূত্রে জানা যায়, মুতাজ তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় গিয়ে আইএসের পক্ষে প্রায় পাঁচ মাস যুদ্ধ করেছেন। তারপর তিনি সেখান থেকে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় এসে নব্য জেএমবির কয়েকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

পুলিশ বলছে, মুতাজের বাবা বাংলাদেশি, মা পাকিস্তানি, সৌদি আরবে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ পাসপোর্ট বানায় মুতাজ। আরবি আর ইংরেজিতে দক্ষ থাকলেও বাংলা ভাষা জানেন না তিনি।

মুতাজের বাংলাদেশে আসা ও উগ্রপন্থিদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার তথ্য কিছুটা ভাবিয়ে তুলেছে জঙ্গি দমনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।

আর এসবের প্রেক্ষিতেই, যেকোনো পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সার্বিক নিরাপত্তা ঢেলে সাজানো ও সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যদিও তারা বলছে, সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই।

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে যেকোনো দেশেই, কোনো ঘটনা ঘটতে পারে। এমন টার্গেট আমাদের দেশেও থাকতে পারে। তবে দেশের জঙ্গিদের সক্ষমতা নেই। তারা চাইলেও কোনো ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারবে না।’

একই বিষয়ে র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ‘সারা বছর এই জঙ্গিদের কোনো না কোনো গ্রুপ সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় তাদের অনেকেই আবার ধরা পড়ে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads