• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
হাসপাতালে না আসা ১৬৭ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

হাসপাতালে না আসা ১৬৭ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ মে ২০১৯

চাকরিতে আছেন, অথচ হাসপাতালে আসেন না- এমন ১৬৭ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। আইনগত নিষ্পত্তি শেষে তাদের প্রয়োজনে চাকরিচ্যুত করা হবে বলে জানান কর্মকর্তারা। সংখ্যাটি নিশ্চিত করলেও কোন কোন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তারা কত দিন ধরে অনুপস্থিত, এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি।

যাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে, তারা কোনো যোগাযোগই রাখেন না হাসপাতালের সঙ্গে। তারা কোথায় আছেন, সেই তথ্যও নেই। এদের কেউ কেউ তিন বা সাড়ে তিন বছর ধরেও কর্মস্থলে অনুপস্থিত। তবে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ না করলেও তাদের ব্যাংক হিসাবে বেতন গেছে। মামলার পর বেতন বন্ধ করা হয়েছে। এর আগে অনুপস্থিতির বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অনুপস্থিত এক চিকিৎসকের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি জানা যায়। মির্জাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীন তরফপুর উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহকারী সার্জন রেজুয়ানা ইসলাম তরা গত সাড়ে তিন বছর ধরে কর্মস্থলে আসেন না। তিনি কোথায় আছেন সে তথ্য জানেন না দফতরের কেউ। এই চিকিৎসকের বিষয়ে এর আগেও প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল। সে সময় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাহরিয়ার সাজ্জাত। কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। রেজুয়ানা ২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট মির্জাপুরের তরফপুর ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগ দেন। ২০১৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি আর হাসপাতালে আসেন না।

মির্জাপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শাহরিয়ার সাজ্জাত জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পর রেজুয়ানাসহ সারা দেশে ১৬৭ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। তবে তারা কোথায় আছেন তা জানা নেই। জানা গেছে, সরকারি চাকরি বহাল আছে অথচ হাসপাতালে যান না এমন চিকিৎসকের সংখ্যাই বেশি। দেশের ১১টি হাসপাতালে দুর্নীতি দমন কমিশনের একদিনের অভিযানে ৬০ শতাংশ চিকিৎসকের অনুপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে।

গত জানুয়ারিতে আলোচিত সেই অভিযানের পর নানা সময় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসকের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন হয়েছে। এমনো দেখা গেছে, তিন দিনের ছুটি নিয়ে সাড়ে তিন বছর ধরে লাপাত্তা চিকিৎসক। সেবা না দিলেও জনগণের করের টাকার সাড়ে ১৩ লাখ টাকা বেতন ভাতা হিসেবে এক চিকিৎসকের পকেটে ঢোকার ঘটনাও ঘটেছে। চিকিৎসকদের গণহারে কাজে ফাঁকি দেওয়ার বিষয়টি সামনে আসার পর খোদ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি এসেছে, হাসপাতালে না গেলে চাকরি থাকবে না। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের কাছে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলার এ ঘটনা ঘটল।

চিকিৎসকদের হাসপাতালে আনতে গত জানুয়ারিতে একটি বিশেষ উদ্যোগের আলোচনা হয়েছিল। হাসপাতালে আঙুলের ছাপ দিয়ে ডিজিটাল হাজিরা পদ্ধতি চালু নিয়ে আলোচনা হয়েছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। তবে এখনো সে পদ্ধতি চালু হয়নি।  স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এটি সব সরকারি দফতরে একসঙ্গে চালু হলে সেটা ভালো দেখায়। কেবল হাসপাতালে এই পদ্ধতি চালু হলে চিকিৎসক বা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভালোভাবে নাও নিতে পারেন। তারপরও বিষয়টি নিয়ে ভাবা হচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads