উখিয়ার মধুরছড়া রোহিঙ্গা শিবিরে সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় দুর্যোগ মোকাবেলা বিষয়ক এই মহড়াটি এর আগে দেশের জায়গায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বেলা সাড়ে ১১ টায় উখিয়ার মধুরছড়া রোহিঙ্গা শিবিরে আসন্ন দুর্যোগপূর্ণ মওসুমের আগে দেশের দুর্যোগ সংক্রান্ত অন্যান্য সামরিক ও বেসামরিক প্রতিষ্ঠানসগুলোর অংশগ্রহণে এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।
সেনাবাহিনীর কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডার ও রামু ১০ পতাদিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মাইন উল্লাহ চৌধুরী বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলা বিষয়ক এই মহড়াটি এর আগে দেশের জায়গায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোহিঙ্গা শিবিরে এটি প্রথম। এতে সেনাবাহিনীর ৬৭২ জন, স্বেচ্ছাসেবক ৩০০ জন, অন্যান্য সংস্থার উদ্ধার কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক ৩০০ জনসহ মোট ১ হাজার ৪০০ জন বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক অংশগ্রহণ করে।
তিনি আরো বলেন, এটি অত্যন্ত কার্যকরী একটি মহড়া। এই মহড়া থেকে বুঝা গেছে যে কত দ্রুত সময়ের মধ্যে সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য সংস্থাগুলো দুর্যোগ কবলিত লোকজনকে উদ্ধার এবং সেবা দিতে প্রস্তুত। তাছাড়া জনগণ সচেতন হতে পারবে যে, দুর্যোগকালিন সময়ে তাকে ছুটাছুটি না করে কি করা উচিত। দুর্যোগ মোকাবেলা বিষয়ক মহড়ায় প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাহফুজুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল, সেনাবাহিনীর কক্সবাজার এরিয়া কমান্ডার ও রামু ১০ পতাদিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মাইন উল্লাহ চৌধুরীসহ সেনাসদরের উর্ধ্বতন পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।
দুর্যোগ মোকাবেলা বিষয়ক মহড়ায় প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বর্তমান সরকার অত্যন্ত পারদর্শীতার পরিচয় দিয়েছে। যেটি বর্হিঃবিশে^ প্রশংসিত হয়েছে। এই মহড়াটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মহড়া দেখে যে কেউ বুঝতে পারবে বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবেলায় পুরোপুরি সক্ষম। পাশাপাশি এসব মহড়ার ফলে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী লোকজনও সচেতন হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে ২৩ হাজার পরিবারের ১ লাখকে রোহিঙ্গাকে পুর্নবাসনের জন্য সবকিছু প্রস্তুত। সেখানে স্বাস্থ্যসেবার জন্য হাসপাতাল, ১০০ টি সাইক্লোন শেল্টারসহ নিরাপদে বসবাসের জন্য যা যা প্রয়োজন সবকিছু করা হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কিছু বিষয়ে দ্বিমত পোষণের কারণে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর আটকে আছে। তারা (আন্তর্জাতিক সংস্থা) ৫২ টি শর্ত দিয়েছিল। সেগুলোর যথাযথ জবাব দেওয়া হয়েছে। এখন তাদের সাথে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের বিষয়ে নেগুসিয়েশন চলছে। আমরা আশাবাদী শিগগিরই রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর শুরু হবে।
স্থানীয়দের সহায়তার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক সকল সংস্থার সংশ্লিষ্টদের সাথে সরকারের একাধিক বৈঠক হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের যে পরিমাণ সহায়তা দেবে, স্থানীয়দেরও তার সমপরিমাণ সহায়তা দিতে হবে। এই শর্তে তারা রাজি হয়েছেন। এখন থেকে রোহিঙ্গাদের সমান সহায়তা পাবে স্থানীয়রাও। উদাহরণ স্বরূপ ১০০ ডলার সহায়তা আসলে ৫০ ডলার রোহিঙ্গাদের জন্য, আর বাকি ৫০ ডলার স্থানীয়দের জন্য।