• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
চলতি বছরই ঢাকা সফরে আসছেন নরেন্দ্র মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

ফাইল ছবি

জাতীয়

চলতি বছরই ঢাকা সফরে আসছেন নরেন্দ্র মোদি

  • হাসান শান্তনু
  • প্রকাশিত ২৬ মে ২০১৯

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চলতি বছরেই বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের পরিপ্রেক্ষিতে ফিরতি সফর হিসেবে এ বছরই ঢাকায় আসতে পারেন তিনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরের প্রস্তুতি দুই দেশের পক্ষ থেকেই নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে আগামী জুনে ঢাকায় আসছেন। দুই দেশের কূটনৈতিক সূত্র বাংলাদেশের খবরকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্রমতে, চলতি বছরের কোন মাসে ও কোন তারিখে নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় আসছেন, তা এখনো নিশ্চিত হয়নি। তবে টানা দ্বিতীয়বার ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি যে বাংলাদেশ সফরে আসছেন, তা প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। পাশাপাশি মোদির নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের সরকারও ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির আওতায় বাংলাদেশকে তালিকার শীর্ষেই রাখছে। তার সফরের মধ্য দিয়ে অনন্য উচ্চতায় থাকা দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় ভিত্তি পাবে বলে মনে করেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কয়েক কর্মকতা জানান, গত ২৩ মে নরেন্দ্র মোদিকে পাঠানো এক অভিনন্দন বার্তায়ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ভারত সফরের পর ফিরতি সফর হিসেবে ঢাকায় আসার বিষয়ে তাকে প্রতিশ্রুতি দেন নরেন্দ্র মোদি। দুই দেশের নানা রাষ্ট্রীয় বাস্তবতায় শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে নরেন্দ্র মোদির ঢাকায় আসা সম্ভব হচ্ছিল না এতদিন। লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বে নিরঙ্কুশ বিজয়ের মধ্য দিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠনের পর ঢাকায় আসছেন তিনি।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবেরও চলতি মাসেই ঢাকা সফরে আসার কথা ছিল। দেশটির ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নানা ব্যস্ততার কারণে পররাষ্ট্র সচিবেরও ঢাকায় আসা হয়নি। মোদির নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেওয়ার পর জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি ঢাকায় আসতে পারেন। এ ছাড়া পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখলে গত ১৬ এপ্রিল নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক মধ্যাহ্ন ভোজের বৈঠকে মিলিত হন। নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের মধ্য দিয়ে আগামী ৩০ মে রাষ্ট্রপতি ভবনে মোদির দ্বিতীয় মন্ত্রিসভা শপথ নিতে পারে বলে গতকাল শনিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ইঙ্গিত দেয়।

ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন সূত্র জানায়, গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেই প্রধানমন্ত্রী মোদির ঢাকায় সফরের বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল দুই দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে। গত বছরের মার্চে প্রকাশিত ভারতের অনলাইন ‘দ্য ইকোনমিক টাইমসের’ এক প্রতিবেদনেও এসব তথ্য বলা হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ ছিল, অচিরেই ঘনিষ্ঠ দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ ও নেপাল সফরের পরিকল্পনা করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুই দেশের জাতীয় নির্বাচনের আগে ঢাকা ও কাঠমান্ডুর প্রতি ভারত সরকারের সমর্থন জানাতে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সফরে যাচ্ছেন তিনি।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের সূত্র জানায়, গত বছরের এপ্রিলে আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল ভারত সফরে যায়। দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপির শীর্ষ নেতারা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলকে ‘শিগগিরই’ নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের সম্ভাবনার কথা জানান। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদি পরের বছর, অর্থাৎ ২০১৫ সালে ঢাকা সফর করেন। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর তিনবার দিল্লি সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একাদশ সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গত ৭ জানুয়ারি সরকার গঠিত হওয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ড. এ কে আবদুল মোমেন প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে ভারতকে বেছে নেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের আমন্ত্রণে গত ৭ ফেব্রুয়ারি দিল্লি যান ড. মোমেন। এর আগে ২০১৪ সালে ভারতে বিজেপির সরকার গঠনের পর সুষমা স্বরাজের প্রথম একক সফর ছিল বাংলাদেশ। গত পাঁচ বছরে বিজেপি ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক ভালোই ছিল। এবারো সেই যাত্রা অব্যাহত থাকবে বলে দলটির নেতারা আশাবাদী।

কূটনীতিকরা মনে করেন, সম্পর্কের ধারাবাহিকতা রক্ষায় দুই দেশের ক্ষমতাসীন দলই এখন সচেষ্ট। পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তি। গত দশ বছরে দুই দেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারণ, ছিটমহল বিনিময়, ভারতকে সড়কপথে ট্রানজিট দেওয়া, চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া, দুই দেশের প্রতিরক্ষা চুক্তি ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে বাংলাদেশের আন্তরিক সহায়তা- এসব কিছুতে অগ্রগতি হয়েছে।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads