ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে নিপীড়নের পর পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ ১৬ জনের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রাণদণ্ডের সুপারিশ করে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার বেলা সোয়া ২টায় ফেনীর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহ আলম ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে এই চার্জশিট জমা দেন।
তিনি জানান, চার্জশিটে অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাওয়া হয়েছে।
বাকি আসামিরা হলেন-স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন, নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), কাউন্সিলর মাকসুদ আলম ওরফে মোকসুদ আলম (৫০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন ওরফে সাখাওয়াত হোসেন জাবেদ (১৯), হাফেজ আব্দুল কাদের (২৫), আবছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মনি (১৯), উম্মে সুলতানা ওরফে পপি ওরফে তুহিন ওরফে শম্পা ওরফে চম্পা(১৯), আব্দুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন ওরফে মামুন (২২) ও মোহাম্মদ শামীম (২০)।
আজ যে চার্জশিট জমা দেয়া হতে পারে সেটি গতকালই জানানো হয়েছিল। ধানমণ্ডিতে পিবিআই সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার জানান, ৭২২ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। তিনি হত্যাকাণ্ডের সময় জেলে থাকলেও তার নির্দেশনায়ই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এ মামলায় ৯২ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে, যাদের মধ্যে সাতজন ইতিমধ্যে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মেয়েকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ আনেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। মামলাটি তুলে না নেওয়ায় গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে কৌশলে ডেকে পাশের ভবনের তিন তলার ছাদে নিয়ে সিরাজ উদ দৌলার সহযোগীরা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। পাঁচদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টায় ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুবরণ করে নুসরাত।