• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত দিনাজপুর বড়মাঠ

দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দান

ছবি: বাংলাদেশের খবর

জাতীয়

ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত দিনাজপুর বড়মাঠ

  • মো. শাহাদৎ হোসেন শাহ, দিনাজপুর
  • প্রকাশিত ০২ জুন ২০১৯

দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে  দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দান। এই মাঠে চলতি বছর প্রায় ১০ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে নামাজের জন্য মাঠ প্রস্তুতির কাজ পুরোদমে করছেন মাঠ সংশ্লিষ্টরা।

উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মিনার দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড়ময়দানে ঈদের প্রধান জামাত  সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর এ শহীদ ময়দানের পশ্চিম প্রান্তে ২০১৫ সালে এই ঈদগাহের নির্মাণকাজ শুরু হয়। নির্মানের প্রায় দেড় বছরে এটি নামাজের জন্য পুরো প্রস্তুত করা হয়। উপমহাদেশে এর তুলনা করার মত অন্য কোনো ঈদগাহ মাঠ নেই। ৫২ গম্বুজের দুই ধারে ৬০ ফুট করে ২টি মিনার, মাঝের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে এবং প্রধান মিনারের উচ্চতা ৫৫ ফুট। এই সব মিনার আর গম্বুজের প্রস্থ হলো ৫১৬ ফুট।  ঐতিহাসিক গোড়-এ শহীদ ময়দানের পশ্চিম দিকে প্রায় অর্ধেক জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঈদগাহ্ মিনারটি। প্রত্যেকটি গম্বুজে বৈদ্যুতিক বাতি সংযোগ দেওয়া হয়েছে। মিনার দুটির উচ্চতা ৫০ ফিট। আর যে মেহেরাবে খতিব বয়ান করবেন সেটির উচ্চতা ৫০ ফুট। ৫২টি গম্বুজ ২০ ফুট উচ্চতায় স্থাপন করা হয়েছে। গেট দুটির উচ্চতা ৩০ ফুট।

২০১৫ সালের ডিসেম্বরে  মিনারের নির্মান কাজ শুরু হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে বিশাল মিনার নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পরে তা ৬ মাস বাড়ানো হয়। বিস্তৃর্ণ মাঠের জামাতের কারণে প্রায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে বালু ভরাট করা হয়। ঈদগাহের পেছনে শতবছরের স্টেশন ক্লাব ভেঙ্গে ফেলা হবে। এজন্য প্রাথমিক পর্যায়ে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাঠ প্রস্তুতি কাজ চলছে পুরোদমে। যেখানে খাল রয়েছে সেই জায়গাগুলো মাটি দিয়ে পূরণ করা হচ্ছে। দেশের এত বড় ঈদগাহ মাঠ নামাজ আদায়ের জন্য মাঠ তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিকরা। যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। গোটা মাঠ যেন সবুজের ঘাসের আস্তরনের পরিণত হয়েছে।

এই ঈদগাহ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে তিন কোটি ৮০ লাখ টাকা। প্রতিবছর দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায়।

দিনাজপুরবাসী আশা করছে, এবার থেকে ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মাঠে সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এই ঈদ জামাতে ইমামতি করবেন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব শামসুল ইসলাম কাশেমী।

পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম জানান, প্রায় ১০ লাখেরও বেশি মুসল্লির অংশগ্রহণে ঈদের প্রধান জামাতকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ঈদগাহের চারপাশে মেটেল ডিটেক্টর দিয়ে মুসল্লিদের তল্লাশীর পর জামাতে প্রবেশ করানো হবে। বিপুল সংখ্যক পুলিশ সাদা পোশাকে ঈদগাহ প্রাঙ্গণে দায়িত্ব পালন করবেন। র‍্যাবসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীরাও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে সক্রিয় থাকবেন। মাঠের নিরাপত্তার জন্য নির্মিত হয়েছে ৪টি বিশাল পর্যবেক্ষণ টাওয়ার।

জাতীয় সংসদের হুইপ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম জানান, শুধু বাংলাদেশই নয়, উপমহাদেশে এত বড় মিনার সম্বলিত ঈদগাহ মাঠ আর একটি নেই। এ বছর প্রায় ১০ লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণে ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে যা শোলাকিয়ার চেয়ে অনেক বড়। লোক সমাগম বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন স্তরের লোকজনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।

এই ঈদগাহ মাঠে লোক সমাগম অনেক বেশি হয়ে থাকবে যা ইতিহাস হয়ে থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads