• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
১৫ বছরেও সম্পন্ন হয়নি হুমায়ুন আজাদ হত্যার বিচার

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

১৫ বছরেও সম্পন্ন হয়নি হুমায়ুন আজাদ হত্যার বিচার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ জুন ২০১৯

২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি একুশে বইমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে বাংলা একাডেমির উল্টোদিকে ফুটপাতে সন্ত্রাসী হামলায় মারাত্মক আহত হন প্রথাবিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদ। ওই হামলার পরদিন অর্থাৎ ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর রমনা থানায় হুমায়ুন আজাদের ছোটভাই মঞ্জুর কবির বাদী হয়ে একটি হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।

এ হামলার পর তিনি ২২ দিন সিএমএইচে এবং ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসা নেন। ওই বছরের ১২ আগস্ট তিনি জার্মানির মিউনিখে মারা যান। পরে হত্যাচেষ্টার মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়। কিন্তু ১৫ বছরেও এই মামলাটির বিচার সম্পন্ন হয়নি। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার চতুর্থ মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।

জানা গেছে, ২০০৭ সালে ১৪ নভেম্বর দণ্ডবিধি ও বিস্ফোরক আইনে এ মামলায় পৃথক দুটি অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়। এর মধ্যে হত্যা মামলায় পাঁচজন ও বিস্ফোরক আইনে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক কাজী আবদুল মালেক। পরে এ মামলায় ২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

পরে সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে হুমায়ুন আজাদের ভাই ও মামলার বাদী মঞ্জুর কবির মামলার বর্ধিত তদন্তের আবেদন করেন। আদালত ওই বছরের ২০ অক্টোবর মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

বিভিন্ন সময় মামলার তদন্ত করেন রমনা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান, সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক কাজী আবদুল মালেক, মোস্তাফিজুর রহমান ও লুৎফর রহমান।

২০১২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর জেএমবির পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু করেন তৎকালীন ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. হাবিবুর রহমান।

আসামি মিজানুর রহমান ও আনোয়ারুল আলম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা বলেন, ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ বইটি লেখার কারণে হুমায়ুন আজাদের ওপর এ হামলা চালানো হয়। যার পরিকল্পনা করেন সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই।

মামলার অপর আসামিরা হচ্ছেন হাফিজ মাহমুদ, সালেহীন ও নুর মোহাম্মদ ওরফে সাবু। এর মধ্যে সাবু ছাড়া বাকি আসামিরা কারাগারে। আর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ধারায় মিজানুর রহমান, আনোয়ারুল আলম ও নুর মোহাম্মদ ওরফে সাবুকে আসামি করা হয়েছে।

অন্য একটি মামলায় জঙ্গিনেতা শায়ক আবদুর রহমান, আতাউর রহমান সানি, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই, খালেদ সাইফুল্লাহর মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর হওয়ায় মামলার অভিযোগপত্র থেকে তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়।

এ ছাড়া মামলার চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় জামায়াতের নায়েবে আমির দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীসহ আরো পাঁচজনের নাম।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানিয়েছেন, এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আগামী ১৭ জুন দিন ধার্য রেখেছেন আদালত। দিন ধার্য করে গত ৬ মে এই আদেশ দেন আদালত। ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মাকছুদা পারভীন এই আদেশ দেন।

আদেশের পর আদালত থেকে বের হয়ে গণমাধ্যমকে ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম কৌঁসুলি বিপুল দেবনাথ বলেছিলেন, যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আদালত রায়ের তারিখ ঠিক করে দেবেন। আশা করছি, শিগগিরই এ মামলার রায় হবে।

এ মামলার দুই আসামি জেএমবির শূরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক এবং আনোয়ার আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদের আত্মপক্ষ শুনানি শেষ হয় ওই দিন। তারা দুজনই আদালতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads