• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
রাজধানীতে বৃক্ষমেলায় বিদেশি গাছের চাহিদা বেড়েছে

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

রাজধানীতে বৃক্ষমেলায় বিদেশি গাছের চাহিদা বেড়েছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ জুন ২০১৯

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বাণিজ্য মেলার মাঠে চলছে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলা-২০১৯। মাঠজুড়েই হরেক রকমের ফুল ও ফলের গাছ। যতদূর দৃষ্টি যায় শুধু সবুজ আর সবুজ। যেন সবুজের মেলা বসেছে।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে চলছে মাসব্যাপী এ মেলা। পরিবেশ রক্ষায় মানুষকে গাছের গুরুত্ব বিষয়ে সচেতন করতে ও দেশি গাছের প্রজাতি টিকিয়ে রাখতেই মূলত এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলা ঘুরে দেখা গেছে, দেশি জাতের গাছ গুরুত্ব হারিয়েছে। নার্সারিগুলো ঝুঁকেছে বিদেশি গাছ ও হাইব্রিড জাতের গাছ চাষের দিকে।

মেলায় বিভিন্ন ধরনের ফলের মধ্যে আম, পেয়ারা, বেল, লটকন, জাম্বুরা, মাল্টা, কমলা, কামরাঙা, জামরুল, শরিফা, আতা, করমচা ও আমলকী গাছের উপস্থিতিই বেশি লক্ষ করা গেছে। তবে মেলায় এবার যেসব ফলের গাছ আছে, সেগুলো দেশি জাতের নয়। গাছগুলোর বেশিরভাগই হাইব্রিড থাইল্যান্ড বা চায়না জাতের। এছাড়া সৌদি আরবের খেজুর থেকে শুরু করে থাই ড্রাগন, আমেরিকান অ্যাভোক্যাডো, চায়না পিচফল, ইউরোপের মালবেরি, দক্ষিণ আমেরিকান জাবাটিকাবা, থাই লঙ্গানের মতো ফলের চারাও মিলছে বৃক্ষমেলায়। আকারে বড় ও দেখতে লোভনীয় বিদেশি এসব ফলের ভিড়ে দেশি জাতের ফলের গাছ খুঁজে পাওয়াই কঠিন।

শুধু ফল নয়, ফুল গাছের চারার বেলাতেও একই চিত্র। দেশি জাতের গাঁদা, বেলি, নয়নতারা, নন্দিনীর মতো কিছু ফুল গাছ চোখে পড়ছে মেলায়; তবে পরিমাণে নগণ্য। ফুল গাছ বলতেই নার্সারিগুলোতে চোখে পড়ে থাই, ইন্ডিয়ান ও চায়না জাতের জবা, অর্কিড, পাতাবাহার, গাঁদা, জারবেরা আর ক্যাকটাস।

জাতীয় বৃক্ষ মেলায় দেশি জাতের গাছকে অবহেলা করা হচ্ছে এমন অভিযোগও উঠেছে। যদিও নার্সারিগুলো বলছে, কম সময়ে বাড়তি ফলনের কারণে বিদেশি জাতের চাহিদাই বেশি।

গতকাল মোহাম্মদপুর থেকে মেলায় এসেছিলেন মহিউদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, আমরা গ্রামে বেড়ে উঠেছি দেশি গাছগুলোর সঙ্গে। ছেলেকে নিয়ে মেলায় এসেছিলাম দেশি গাছগুলোর সঙ্গেই পরিচয় করিয়ে দিতে। কিন্তু এখানে এসে দেখি প্রায় সবই বিদেশি গাছের চারা। সব ফল আর ফুলের গাছই নাকি থাই বা ইন্ডিয়ান।

দেশি গাছ মেলায় কম কেন এমন প্রশ্নের জবাবে মহুয়া নার্সারি স্টলের বিক্রেতা ইকবাল হাসান বলেন, এখন সাধারণত সব গাছেই কলম দেওয়া হয়। তাছাড়া হাইব্রিড জাতের গাছগুলোতে ফলন ভালো হয়। বিদেশি জাতের গাছগুলোতে অল্প সময়েই ফল ধরে, ১২ মাসই ফল পাওয়া যায়। তাই এসব জাতের গাছের চারার চাহিদা বেশি। নার্সারিগুলোও বিদেশি জাতগুলো চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক খন্দকার মো. জাকারিয়া বলেন, আমাদের মেলার প্রধান উদ্দেশ্য দেশি জাতের গাছ সংরক্ষণের পাশাপাশি বিদেশি জাতের গাছ চাষে কৃষকদের উৎসাহ দেওয়া। আমরা বিদেশি ফুল ও ফল চাষে নার্সারির মালিকদের প্রশিক্ষণও দিয়ে থাকি। মেলায় দেশি জাতের গাছ আছে, তবে দর্শনার্থীদের চাহিদা বিবেচনায় নার্সারির মালিকরা দৃষ্টিনন্দন বিদেশি জাতের গাছের চারাই এনেছে বেশি।

এদিকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে গত ২০ জুন মাসব্যাপী এই বৃক্ষ মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের বৃক্ষ মেলার প্রতিপাদ্য- ‘শিক্ষায় বন প্রতিবেশ, আধুনিক বাংলাদেশ’। মেলায় মোট ১০৪টি স্টল রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ছয় প্রতিষ্ঠানের জন্য রাখা হয়েছে ১২টি স্টল। আর বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তিমালিকানাধীন নার্সারির জন্য রয়েছে আরো ৯০টি স্টল। বাকি দুটি স্টলের মধ্যে একটি মেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও অন্যটি তথ্যকেন্দ্র।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads