• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
বন্যা ও বর্ষণে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

বন্যা ও বর্ষণে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

  • নাজমুল হুসাইন
  • প্রকাশিত ১৬ জুলাই ২০১৯

সারা দেশে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় বন্যার কারণে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে সরাসরি সবজিসহ কাঁচাবাজারের পণ্যের দামে। বিগত কয়েকদিনে রাজধানীর বাজারে সবজিসহ বেশকিছু নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে কয়েক দফা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বিভিন্ন সড়কের পাশাপাশি বন্দরকেন্দ্রিক জটের পণ্য পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। বিগত প্রায় দেড় সপ্তাহ ধরেই সড়ক ও নৌ উভয় পথেই একই অবস্থা। ফলে একদিকে বেড়েছে পরিবহন ভাড়া, অন্যদিকে বন্দরে আটকা কাঁচা পণ্য পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে, যাতে লোকসানের চিন্তায় পড়েছেন তারা।  

অন্যদিকে বিভিন্ন এলাকায় ভারী বর্ষণ ও বন্যার কারণে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন মোকামে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় পণ্যের জোগান এখন বেশ কম। তাতে প্রতি কেজি সবজি ২০ থেকে ৩০ টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে ক্রেতাকে। এছাড়াও বেশি হারে বেড়েছে পেঁয়াজ, কাঁচামরিচসহ কিছু মুদি পণ্যের দামও।

গতকাল সোমবার সরেজমিনে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁপে ও আলু ছাড়া অন্যান্য সবজি ৫০ টাকার নিচে মিলছে না। বেগুন, কচুরমুখি, উস্তার মতো সবজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকারও ওপরে। অন্যদিকে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম উঠেছে ৫০ টাকায়। আর কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা দরে। এ দাম আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বেশ কিছু ব্যবসায়ী।

অন্যদিকে চাল, আটা, ডাল, তেলসহ বেশকিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আগের তুলনায় বেড়েছে। তারও বড় কারণ এ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। এ বিষয়ে পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম মওলা বাংলাদেশের খবরকে বলেন, দেশের উৎপাদিত পণ্যের পরিবহন খুব একটা ব্যাহত না হলেও বন্দরে অচলাবস্থার কারণে আমদানিনির্ভর পণ্যের সরবরাহ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক ব্যবসায়ীর পণ্য বন্দরে আটকা রয়েছে।

তিনি বলেন, টানা বর্ষণের কারণে দেশের প্রধান বন্দর চট্টগ্রামসহ অন্যান্য স্থল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি পণ্য ওঠানো-নামা প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছে। অন্যদিকে জট কেটে যেসব পণ্য বের হচ্ছে তা সড়কে ভয়াবহ অবস্থায় পড়ছে। এতে ঈদের আগে পণ্য পরিবহনে বাড়তি চাপ তৈরি হচ্ছে। আর বাড়ছে পণ্যেও দাম।

এদিকে আরেক ব্যবসায়ী বলেন, বন্দর থেকে কাঁচামাল খালাস করে বাজারে নেওয়াই এখন প্রধান মাথাব্যথা। খালাস না করা গেলে পণ্যের জন্য বন্দরে বাড়তি অর্থ গুনতে হচ্ছে আবার খালাস হলেও পণ্য পরিবহনে সংকট থেকে যাচ্ছে। পরিবহনের জন্য বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে। সেসব খরচ যুক্ত হচ্ছে পণ্যের দামে, যা পড়ছে ভোক্তার ঘাড়ে।

অন্যদিকে কারওয়ানবাজার ক্ষুদ্র আড়ত মালিক সমিতির হিসাবে, স্বাভাবিক সময়ে সারা দেশ থেকে কারওয়ানবাজারে প্রতিদিন সবজিবাহী ৪০০ থেকে ৪৫০ ট্রাক আসে, যা এখন নেমে আসছে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকের মধ্যে। উত্তরবঙ্গের  বেশকিছু এলাকায় বন্যা ও টানা বর্ষণে ক্ষেতের সবজি নষ্ট হওয়াতে সেসব এলাকা থেকে সবজিবাহী ট্রাক আসছে কম।

ওই বাজারের ব্যবসায়ী এমদাদুল মিয়া বলেন, এ বাজারের বেশিরভাগ জোগান আসে উত্তরবঙ্গের সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর থেকে। সেসব এলাকার বেশকিছু অঞ্চলে বন্যা হচ্ছে। রাজশাহী ও নাটোর এলাকার পরিস্থিতি কিছুটা ভালো। সে কারণে এসব জায়গা থেকে সবজি বেশি আসছে। ফলে সার্বিক জোগান কমেছে।

এদিকে চলমান ভারী বর্ষণ ও বন্যার কারণে পরিবহন ভাড়া বেশ বেড়েছে জানিয়ে কারওয়ানবাজার আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন বলেন, এখন ট্রাকের ভাড়াটাই আড়ত মালিকদের বেশি ভোগাচ্ছে। উত্তরবঙ্গ থেকে ২০ হাজার টাকার ট্রাকভাড়া এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার টাকায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads