• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
দেশি পশুতেই মিটবে কোরবানির চাহিদা

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

দেশি পশুতেই মিটবে কোরবানির চাহিদা

# প্রয়োজন ১ কোটি ১০ লাখ # মজুত ১ কোটি ১৮ লাখ

  • নাজমুল হুসাইন
  • প্রকাশিত ২০ জুলাই ২০১৯

আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য প্রয়োজন হবে প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ গবাদি পশু। ইতোমধ্যে কোরবানিযোগ্য ১ কোটি ১৮ লাখ গবাদি পশুর মজুদ রয়েছে সারা দেশে। ফলে এ বছর দেশি পশু দিয়েই মিটবে কোরবানির চাহিদা। এর জন্য বাড়তি পশু আমদানির প্রয়োজন হবে না।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সারা দেশে থেকে পাওয়া তথ্যে কোরবানিযোগ্য ৪৫ লাখ ৮২ হাজার গরু-মহিষ, ৭২ লাখ ছাগল-ভেড়া এবং ৬ হাজার ৫৬৩টি অন্যান্য পশুর প্রাপ্যতা নিশ্চিত হয়েছে। এ বছর মজুত গবাদি পশুর সংখ্যা গত বছরের থেকে বেশি। গত ঈদে কোরবানিযোগ্য গবাদি পশুর মোট সংখ্যা ছিল ১ কোটি ১৫ লাখ এবং কোরবানি হয়েছিল ১ কোটি ৫ লাখের মতো। ফলে এ বছর গবাদিপশু বেড়েছে প্রায় ৩ লাখ।

এমন পরিস্থিতিতে কয়েকদিন আগে ঈদ পর্যন্ত সীমান্তপথে বৈধ-অবৈধ সব ধরনের গবাদি পশুর আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশ মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পর ইতোমধ্যে ভারতীয় গরুর অনুপ্রবেশ উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। আগে প্রতি বছর ২৪-২৫ লাখ ভারতীয় গরুর অনুপ্রবেশ ঘটলেও ২০১৮ সালে মাত্র ৯২ হাজার গরু ঢুকেছে দেশে। আর এখন গরু অনুপ্রবেশ বন্ধ থাকলে দেশি খামারিরা তাদের ন্যায্যমূল্য পাবেন।

তবে এতে গবাদি পশুর দাম বাড়তে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক বাংলাদেশের খবরকে বলেন, চাহিদার তুলনায় গবাদি পশু বেশি পরিমাণে মজুত থাকায় আমদানি বন্ধের কোনো প্রভাব বাজারে পড়বে না। কিন্তু এ আমদানি বন্ধ না হলে দেশি খামারিরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তেন। দেশি খামারিদের পশুপালন খাতে একান্ত আগ্রহের কারণেই দেশ মাংসে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পেরেছে। তাদের স্বার্থরক্ষা বড় বিষয়।

এদিকে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে গবাদি পশু পালন ও বেচাকেনায় জন্য সারা দেশের মতো রাজধানী ঢাকার চারপাশে প্রচুর খামারি প্রস্তুত হয়েছেন। এ সংখ্যা প্রায় দেড় হাজারের বেশি বলে জানান ঢাকা জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। এসব খামারির বেশির ভাগ শুধু মাংসের জন্য বাণিজ্যিকভাবে গরু লালনপালন করেন।

অন্যদিকে সারা দেশেও ভিন্ন পেশার শিক্ষিত লোকজনও যুক্ত হচ্ছেন পশুপালন ও বেচাকেনায়। ঈদকে কেন্দ্র করে এ মৌসুমি ব্যবসার জন্য সাত-আট মাস আগে থেকে তারা পশু পালন শুরু করেন। এসব ব্যবসায়ী রীতিমতো খামার গড়ে পশুপালন করে বিক্রি করেন। ফলে বিগত কয়েক বছরে দেশি কোনবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০১৪ সালের পর থেকে ভারত ও মিয়ানমার থেকে পশু আনা কমে আসায় গত চার বছর ধরে ভিন্ন পেশার লোকজনের মৌসুমি এই ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার ঘটনা বাড়ছে। লাভের অঙ্কটাও বেশ ভালো হওয়ায় শিক্ষিত ও চাকরিজীবীরা এতে ঝুঁকছেন। আরো বেশিসংখ্যক ভিন্ন পেশার মানুষ এতে অংশ নিক বলে চাইছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।

এমন পরিস্থিতিতে দেশে গত বছরের চেয়ে এ বছর গরুর উৎপাদন বেড়েছে ১ লাখ ৮৮ হাজার আর ছাগল-ভেড়ার উৎপাদন বেড়েছে এক লাখ। আর জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে গবাদি পশু উৎপাদনে বিশ্বে দ্বাদশ স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এককভাবে ছাগল উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ। ছাগলের দুধ উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয়।

দেশে ক্রমেই বাণিজ্যিক খামার বৃদ্ধিতে পশুপালনে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানান প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (খামার) ড. এ বি এম খালেদুজ্জামান। তার তথ্যে, যেখানে ২০১৮ সালে সারা দেশে খামার ছিল ৪ লাখ ৪২ হাজার ৯৯১টি, বর্তমানে এ সংখ্যা ৫ লাখ ৭৭ হাজার ৪১৬টি। এসব খামার মিলে বর্তমানে দেশে গরুর সংখ্যা ৩ কোটি ৫০ লাখের কাছাকাছি। এর মধ্যে ৫০ লাখ গরু দুধ দেয়। বাকি গরু মাংস উৎপাদনে পালন করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads