• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
কক্সবাজার উপকূলে ভেটকি মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র শনাক্ত

ফাইল ছবি

জাতীয়

কক্সবাজার উপকূলে ভেটকি মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র শনাক্ত

  • প্রকাশিত ২১ জুলাই ২০১৯

কক্সবাজার উপকূলে ২৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভেটকি মাছের প্রাকৃতিক প্রজননক্ষেত্র শনাক্ত করা গেছে। সাগরে স্থাপিত খাঁচায় ভেটকিমাছের ব্রুড লালনপালন করে প্রজনন উপযোগী করা সম্ভব হলে ভেটকি মাছের পোনা উৎপাদনের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।’

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (কেআইবি) অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে মৎস্য খাতের গবেষকরা এই তথ্য জানিয়েছেন।

জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০১৯ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) “উপকূলীয় মৎস্য সম্পদের টেকসই উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা ঃ এসডিজি প্রেক্ষিত” শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু সেমিনারে প্রধান অতিথির হিসেবে বক্তৃতা করেন।

বিএফআরআই-এর মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মন্ডল, মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবু সাইদ মোঃ রাশেদুল হক প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

মৎস্য প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে কৃষি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গবেষকদের মধ্যে সমন্বয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

এর আগে তিনি মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের ক্রয়কৃত ৩টি ফ্রিজিং-ভ্যানের চাবি সংস্থার চেয়াররম্যান দিলদার আহমদের নিকট হস্তান্তর করেন। এসব ভ্যানের মাধ্যমে উপকূলীয় অঞ্চলের আহরিত মাছ ঢাকায় বাজারজাত করা হবে।

সেমিনারে গবেষকরা জানান, মিঠাপানির মাছ চাষে বাংলাদেশ বিশ্বে রেকর্ড করলেও উপকূলীয় লোনাপানির মাছ ও জলজ সম্পদের দিকে আমরা এতদিন কম নজর দিয়েছি। প্রায় বাংলাদেশের সমপরিমাণ সমুদ্রাঞ্চল অর্জনের পর মিঠপানির পাশাপাশি উপকূলীয় এবং সমুদ্র সম্পদের ওপর আমাদের পূর্ণ নজর দিতে হবে এবং মৎস্য ও জলজ সম্পদের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।

তারা বলেন, বর্তমানে দেশের মাছের উৎপাদন ৪২ দশমিক ৭৭ লাখ মেট্রিক টন (মে.টন) হলেও বিস্তীর্ণ উপকূলীয় সুন্দরবনের চিংড়ি ও কাঁকড়া উৎপাদনের পরিমান মাত্র ২ দশমিক ৮৪ লাখ মে.টন। আর আমাদের ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার বিশিষ্ট সামুদ্রিক জলসীমায় সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন মাত্র ৬ দশমিক ৫৫ লাখ মে.টন, যা মাছের মোট উৎপাদনের ১৫ দশমিক ৩১ ভাগ। তাই তুলনামূলকভাবে অধিক স্বাস্থ্যসম্মত সামুদ্রিক মাছ ও সি-উডের ব্যাপক চাষাবাদ এখন সময়ে দাবি।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এর গবেষকরা বলেন, সমুদ্রোপকূলে সনাক্তকৃত সীউইডের ১১৭টির মধ্যে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনযোগ্য সবুজ, বাদামি ও লালরঙ্গের ১০টি সীউইড বা শৈবাল বাণিজ্যিক গুরুত্বসম্পন্ন। খাদ্য হিসেবে সমুদ্র-শৈবালের বিভিন্ন রকম ব্যবহারের কথাও জানান তারা।

তারা উল্লেখ করে বলেন, গবেষণাগারে উপকূলীয় দুষ্প্রাপ্য চিত্রা, দাতিনা ও কাইন মাগুরমাছের প্রজননক্ষম ব্রুড লালন করা হচ্ছে। গলদা ও বাগদা চিংড়ির পাশাপাশি গবেষণায় অধিক উৎপাদনযোগ্য হরিণা চিংড়ির উৎপাদন প্রতি হেক্টরে আড়াই হাজার কেজি পর্যন্ত পাওয়া গেছে এবং এগুলোর বেঁচে থাকার হার ৮০ শতাংশ। এমনকি তিনমাসে চাকা চিংড়ির গড় ওজন ১৩ গ্রাম পাওয়া গেছে, যা বাজারজাতকরণের উপোযোগী।
তারা তাদের গবেষণা-ফলাফলের ভিত্তিতে সরকার কর্তৃক বরিশালের হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জের ৮২ কিলোমিটার এলাকাকে ইলিশের ৬ষ্ঠ অভয়াশ্রম ঘোষণা এবং সামুদ্রিক মাছের প্রজনন মৌসুমে (২০ মে হতে ২৩ জুলাই) ৬৫ দিন মাছ ধরা নিষিদ্ধকালীন সময়ের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন।

সামুদ্রিক মাছের প্রজননকালীন মাছ ধরা নিষিদ্ধকরণকে যুক্তিযুক্তকরণে এর সপক্ষে গবেষণায় ১৬টি মাছের প্রজননকাল বের করেছেন, যা এপ্রিল থেকে আগস্টের মধ্যেই সম্পন্ন হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads