• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
আজ ঢাকা আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

আজ ঢাকা আসছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ আগস্ট ২০১৯

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ঢাকা আসছেন আজ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর এটাই হবে তার প্রথম বাংলাদেশ সফর। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন তিনি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে শুভেচ্ছা জানাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। দুদিনের এ সফরকালে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন। জয়শঙ্করের এই সফরে অবৈধ অভিবাসন, কানেকটিভিটি, রোহিঙ্গা সংকট এবং দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত তিস্তাসহ ৫৪টি নদীর পানির বণ্টন নিয়ে আলোচনা হতে পারে। পাশাপাশি এ সফরের মাধ্যমে দুদেশের মধ্যকার ব্যবসা-বাণিজ্য, কূটনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদার হতে পারে। ঢাকা সফর শেষে আগামী ২১ আগস্ট নয়াদিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।

জানা গেছে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফরে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে নতুন কোনো সমাঝোতা স্মারক বা চুক্তি স্বাক্ষর হচ্ছে না। তবে দুদেশের মধ্যকার সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন ড. এ কে আবদুল মোমেন এবং এস জয়শঙ্কর।

এদিকে, আগামী ২২ আগস্ট সীমিত আকারে হলেও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। যদিও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ২২ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলা হচ্ছে না। গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিসে আয়োজিত রোহিঙ্গাবিষয়ক এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হক বলেন, প্রত্যাবাসন যেকোনো সময় শুরু হতে পারে।

তিনি আরো বলেন, পর্দার অন্তরালে অনেক কিছু হচ্ছে, চেষ্টা হচ্ছে। তবে সব চেষ্টা সফল হবে এমন নয়। আগামী কয়েক সপ্তাহ আমরা রোহিঙ্গাদের উৎসাহিত করব, যাতে তারা নিজ দেশে ফিরে যায়। যদি তারা ফিরে না যায়, তবে শুধু জমির অধিকার নয় তারা সে দেশে তাদের সব অধিকার হারাবে।

বিশ্লেষকদের মতে, আনুষ্ঠানিকভাবে না হলেও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি গুরুত্ব পেতে পারে। এ ছাড়া সম্প্রতি কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থানগত বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, ভাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরকালে দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্যিক ভারসাম্যের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হতে পারে। তবে সফরটি সৌজন্য সফর হওয়ায় এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা  হচ্ছে না।

জানা গেছে, ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফরে নতুন কোনো চুক্তি বা সমাঝোতা স্মারক না হলেও দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠক হবে।

এর আগে গত ২৯ জুলাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছিলেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের আগস্টের ঢাকা সফর হবে সৌজন্য সফর। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ১৪ জুন এস জয়শঙ্করের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুুল মোমেনের তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে ‘কনফারেন্স অন ইন্টার-অ্যাকশন অ্যান্ড কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজারস ইন এশিয়া (সিআইসিএ)’র ৫ম শীর্ষ সম্মেলনের সময় সাইড লাইন বৈঠকে প্রথম সাক্ষাৎ ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময়ে বহুল প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তি সম্পাদন ও সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ভারতের সক্রিয় সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তখন বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে তার দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ‘পরিণত সংবেদনশীলতা’ প্রদর্শন করেছে। ভারতের পূর্বমুখী অর্থনৈতিক কূটনীতির প্রবেশদ্বার হিসেবে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও ভূ-কৌশলগত সুবিধার কথা উল্লেখ করে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর তখন বলেছিলেন, বিমসটেককে (বিআইএমএসটিইসি) শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে উভয় দেশের যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন, যা উভয় দেশের জন্য মঙ্গলজনক। এ ছাড়া ভারত এ অঞ্চলের  দেশগুলোর মধ্যে রিজিওন্যাল কানেকটিভিটির ওপর অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করে থাকে।

উল্লেখ্য, ড এ কে আবদুল মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর ভারতের আমন্ত্রণে নয়াদিল্লিতে গত জানুয়ারিতে প্রথম বিদেশ সফর করেন। আর এর আগে, ২০১৪ সালে ভাতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ দায়িত্ব গ্রহণের পর ওই বছরের ২৫ জুন প্রথম বিদেশ সফরে বাংলাদেশে আসেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads