• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
ডাবের পানি ৪৮০ টাকা লিটার

ফাইল ছবি

জাতীয়

ডাবের পানি ৪৮০ টাকা লিটার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২১ আগস্ট ২০১৯

দেশে বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুর ‘পিক টাইম’ এখনো আসেনি। সামনের কয়েক মাসে ডেঙ্গু রোগী বাড়বে। এর মাঝে এ রোগে আক্রান্ত রোগীকে ডাবের পানি পান করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। আর এ সুযোগে সারা দেশে বেড়ে গেছে ডাবের দাম।

সরেজমিন এমন তথ্যের সত্যতাও পাওয়া গেছে।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে হাসপাতালগুলোর সামনে বেশি দামে ডাব বিক্রি হতে দেখা যায়। রাজধানীর রামপুরার বাসিন্দা কাজী সাজ্জাদ হোসেন।

গত সোমবার দুপুরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত এক আত্মীয়কে দেখতে যান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেটের বাইরে কচি ডাব দেখে রোগীর জন্য তা কিনতে চান সাজ্জাদ। কিন্তু দোকানির মুখে ছোট সাইজের একটি কচি ডাবের দাম ১২০ টাকা শুনে তাজ্জব বনে যান তিনি। পাশের আরো দুটি দোকান ঘুরে দেখেন একই দাম। পরে নিরুপায় হয়ে বিক্রেতার হাতে এক লিটারের একটি খালি বোতল দিয়ে সেটিতে কচি ডাব কেটে পানি দিতে বলেন সাজ্জাদ। এক লিটারের বোতলটি ভর্তি হতে চার চারটি কচি ডাব কাটতে হলো দোকানির। সাজ্জাদ বলেন, দেশটা কি মগের মুল্লুক হয়ে গেছে? ছোট সাইজের একটা কচি ডাবের দাম ১২০ টাকা হয় কী করে? এক লিটার ডাবের পানির দাম যদি ৪৮০ টাকা হয়, তাহলে গরিব রোগীরা তা কীভাবে কিনবে?

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার একাধিক ডাব বিক্রেতা দামের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কথা স্বীকার করে জানান, তারা বেশি দামে কিনে আনছেন বলে বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ নিয়ে প্রতিদিনই একাধিক ক্রেতার সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ডাব বিক্রেতা কফিল উদ্দিন জানান, ভাদ্র ও আশ্বিন মাসে এমনিতেই ডাবের সরবরাহ অপেক্ষাকৃত কম থাকে। এ ছাড়া গত দুই মাস ধরে ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ডাবের চাহিদা বহুগুণ বেড়ে গেছে। চিকিৎসকরা ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের ডাবসহ বিভিন্ন ধরনের পানীয় বেশি পান করার পরামর্শ দেওয়ায় ডাবের দামে এর প্রভাব পড়েছে।

তিনি জানান, মাস খানেক আগেও যে ডাবের প্রতিটির দাম ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করেছেন, সেই ডাব এখন ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ১০ টাকা লাভে ৮০ টাকায় বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

রোগীর স্বজনরা সবাই ছোট সাইজের কচি ডাবের খোঁজ করায় চাহিদা বেড়েছে। ওই ডাব কমপক্ষে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে তিনি স্বীকার করেন। একই বাজারে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ডাব বিক্রি করছেন হাফিজ মিয়া। তিনি জানান, তার ব্যবসায়ী জীবনে কখনো একটা ডাব ১০০ টাকায় বিক্রি করতে পারেননি। তবে গত কয়েক দিন ধরে হরহামেশাই এমন দামে ডাব বিক্রি করছেন তিনি। ডাবের চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

হাফিজের কথার পুনরাবৃত্তি করলেন আরেক ডাব বিক্রেতা কালাম উদ্দিন। ১৫ বছর ধরে এই বাজারে ডাব বিক্রি করছেন বলে দাবি কালামের। তিনি জানান, বাজারে নিয়মিত ৪০ থেকে ৬০ টাকা দরে ডাব বিক্রি করেন তারা। ডাবের মান যদি খুব ভালো হয়, তাহলে কালেভদ্রে তা সর্বোচ্চ ৮০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারেন। তবে এবার নিয়মিত ৮০ টাকার ওপর সাধারণ মানের ডাবও বিক্রি করতে পারছেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads