• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

সাপ্লাই চেইন অর্থায়নে আস্থার সংকট

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সাপ্লাই চেইন অর্থায়নে সমন্বিত গাইডলাইন জরুরি বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থাপিত প্রবন্ধে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সাপ্লাই চেইন অর্থায়নে সমন্বিত দিকনির্দেশনা না থাকায় ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আস্থা পাচ্ছে না। এ কারণে বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সাপ্লাই চেইন অর্থায়ন তেমন গতি পায়নি।

গতকাল রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে ‘সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএম-এর ড. মোজাফফর আহমদ চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএম-এর অধ্যাপক এবং পরিচালক (গবেষণা, উন্নয়ন ও পরামর্শ) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি। তিনি তার বক্তব্যে সাপ্লাই চেইন অর্থায়নের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করেন।

গোলটেবিল বৈঠকে গবেষণা প্রতিবেদনও উপস্থাপন করেন ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি। চার সদস্যের একটি গবেষণা দল এ গবেষণা সম্পন্ন করে। গবেষণা দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বিআইবিএম-এর সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহেল মোস্তফা সিএফএ, বিআইবিএম-এর সহকারী অধ্যাপক মো. রুহুল আমীন এবং তোফায়েল আহমেদ।

গবেষণায় প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি দুই ধরনের তথ্যের ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষণায় দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিআইবিএম-এর প্রকাশনা থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে।

গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন বিআইবিএম-এর নির্বাহী কমিটির সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএম-এর সুপারনিউমারারি অধ্যাপক এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংক-এর প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সাবেক সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলী, এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রিন্সিপাল ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর স্পেশালিস্ট ডংগং জাং।

মূল প্রবন্ধে ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জি বলেন, বাংলাদেশ সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট সোসাইটি (বিএসসিএমএস), ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংগঠন, এসএমই ফাউন্ডেশন এ ধরনের পণ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার উদ্যোগ নিতে পারে। বিশেষ করে করপোরেট হাউজ এবং অ্যাংকরদের (বড় ক্রেতা) মধ্যে সাপ্লাই চেইনের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে পারে।

এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্সের বর্তমান পোর্টফোলিও প্রায় ৮৭০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯০ শতাংশের মার্কেট শেয়ার আর্থিক প্রতিষ্ঠানের। বাংলাদেশে ধীরে ধীরে সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স জনপ্রিয় হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক নতুন পণ্যের বিষয়ে সব সময়ই ইতিবাচক। তবে নতুন পণ্যের সব ধরনের খোঁজখবর এবং ঝুঁকি চিহ্নিত করে তার পর অনুমোদন দেওয়া হয়।

অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকারদের মধ্যে সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্সকে সুপরিচিত করতে পারলে এসএমই খাতের অগ্রগতি আরো ত্বরান্বিত হবে, যা এসডিজি লক্ষ্য পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স-এর ক্ষেত্রে বিশ্বাসযোগ্যতা, সুনাম, পূর্ব অভিজ্ঞতা, ব্যাংকারদের দক্ষতা ও মেধা, দরকষাকষির দক্ষতা ইত্যাদি মূল ভূমিকা পালন করে।

তিনি আরো বলেন, সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্সের ক্ষেত্রে ইউনিফর্ম রেগুলেশন প্রয়োজন, যাতে সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান একইভাবে কাজ করতে পারে। এ ধরনের ক্ষেত্রে দক্ষ ব্যাংকারের খুব অভাব। এজন্য দক্ষতা বৃদ্ধির তাগিদ দেন তিনি।

অধ্যাপক মো. ইয়াছিন আলী বলেন, সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্সের মাধ্যমে এসএমই খাতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য দ্রুত একটি কমিটি করে পার্শ্ববর্তী দেশের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করানো সম্ভব।

এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রিন্সিপাল ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর স্পেশালিস্ট ডংগং জাং বলেন, এসএমই খাতসহ কিছু খাতে সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এডিবি ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরো গুরুত্ব দেবে।

সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, সাপ্লাই চেইন অর্থায়ন এসডিজি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads