• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
উন্নতিতে শীর্ষ ২০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

উন্নতিতে শীর্ষ ২০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বিশ্বব্যাংকের সহজ ব্যবসা করার সূচক বা ইজ অব ডুয়িং বিজনেস তালিকায় শীর্ষ ২০ দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশ। ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে এ উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কোনো দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের নিয়মকানুন ও তার বাস্তবায়ন কতটুকু সহজ বা কঠিন তার ওপর বিশ্বব্যাংক এ তালিকা তৈরি করে।

গত শুক্রবার বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০টি দেশের তালিকায় রয়েছে চীন, ভারত, পাকিস্তান, আজারবাইজান, বাহরাইন, জিবুতি, জর্ডান, কেনিয়া, কসোভো, কুয়েত, কিরগিজ প্রজাতন্ত্র, মিয়ানমার,

নাইজেরিয়া, কাতার, সৌদি আরব, তাজিকিস্তান, টোগো, উজবেকিস্তান ও জিম্বাবুয়ে। তবে কোন দেশ কতটা বেশি উন্নতি করেছে, তা প্রকাশ করেনি বিশ্বব্যাংক। আগামী ২৪ অক্টোবর এ প্রতিবেদন পূর্ণাঙ্গরূপে প্রকাশ করবে বিশ্বব্যাংক। দেশের ইংরেজি নামের আদ্যক্ষর অনুযায়ী এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। 

বিদেশি বিনিয়োগ করার আগে দেশ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের এ সূচকটিতে বিনিয়োগ আসে। এ সূচকে উন্নতি করার জন্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) গত কয়েক বছর ধরে কাজ করে আসছে। বাংলাদেশ এ সূচকে এখন ১৯০ দেশের মধ্যে ১৭৬। এবার বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন প্রকাশের পর এ অবস্থানের উন্নতি হবে।

মূলত মোট ৩টি বা ১০টি ভিত্তির নির্দেশকের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাংক ডুয়িং বিজনেসের র‍্যাঙ্কিং বা ক্রমতালিকা তৈরি করে। এগুলো হলো ব্যবসা শুরুর অনুমোদন, ভবন নির্মাণের অনুমতি, বিদ্যুৎ সংযোগ, ভূমি নিবন্ধন, ঋণপ্রাপ্তি, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, কর প্রদান, বৈদেশিক বাণিজ্য, চুক্তির বাস্তবায়ন ও দেউলিয়া ঘোষণার প্রক্রিয়া। এসব প্রক্রিয়ায় জটিলতা, ব্যয় বেশি হওয়া ও দীর্ঘসূত্রতা একটি দেশের পিছিয়ে থাকার কারণ।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসা প্রক্রিয়াকে সহজ করতে বেশ কিছু সংস্কার করেছে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া ও ঋণপ্রাপ্তির দিক দিয়ে উন্নতি করেছে। নতুন কোম্পানি নিবন্ধনে বাংলাদেশ খরচ কমিয়েছে। ডিজিটাল সনদে ফি বা মাশুল কমানো হয়েছে। ঢাকায় নতুন সংযোগের জন্য নিরাপত্তা জামানতের পরিমাণ অর্ধেক করেছে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলো জনবল নিয়োগ ও ডিজিটালাইজেশনের জন্য বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছে। বৈদ্যুতিক পরামর্শক ও প্রধান প্রধান বৈদ্যুতিক পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে লাইসেন্স নিতে সময়ও আগের তুলনায় কমে এসেছে। এছাড়া ঋণপ্রাপ্তির সুযোগ বৃদ্ধিতে উদ্যোগ নিয়েছে ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি)। যেকোনো অঙ্কের ঋণের ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের রেকর্ড ও ডাটা সিআইবির আওতায় এসেছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ব্যবসা সহজ করতে ২০১৬ সাল থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) গঠন করে এর নির্বাহী পরিচালক পদে দায়িত্ব নেন সিনিয়র সচিব এম আমিনুল ইসলাম।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সাবেক চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম বলেন, ব্যবসায়ীরা তখনই বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন, যখন তাদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুযোগ ও সুবিধা নিশ্চিত করা যাবে। দেখতে হবে তারা যেন বিভিন্ন জটিলতায় না পড়েন। আমরা এমন কিছু বিষয় নিশ্চিত করতে চেয়েছি বলে এমন তালিকায় বাংলাদেশ স্থান পেয়েছে। আর বহির্বিশ্ব বিনিয়োগ তখন যখন বাংলাদেশের অবস্থা ভালো হবে। তারা এ র্যাঙ্কিংকে বেশ গুরুত্ব দেয়। আমরা আগের চেয়ে প্রবৃদ্ধি অর্জনে সমর্থ হয়েছি।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ গত বছরের অক্টোবর বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত ‘ডুয়িং বিজনেস রিপোর্ট-২০১৯’ অনুযায়ী বাংলাদেশে ব্যবসা শুরুর দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৯০টি দেশের মধ্যে ১৩৮তম। অবকাঠামো নির্মাণের অনুমতিতে ১৩৮, বিদ্যুৎ-সংযোগ পাওয়ার দিক দিয়ে ১৭৯, ভূমি নিবন্ধনে ১৮৩, ঋণের প্রাপ্যতায় ১৬১, কর পরিশোধের প্রক্রিয়ায় ১৫১, বৈদেশিক বাণিজ্যে ১৭৬, চুক্তির বাস্তবায়নে ১৮৯ ও দেউলিয়া ঘোষণার প্রক্রিয়ায় ১৫৩।

এক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্কোর বা প্রাপ্ত নম্বর ১০০-এর মধ্যে ৪১ দশমিক ৯৭। আর ‘ডুয়িং বিজনেস রিপোর্ট-২০১৮’-তে বাংলাদেশের অবস্থান ও প্রাপ্ত নম্বর ছিল যথাক্রমে ১৭৭ ও ৪০ দশমিক ৯৯।

প্রতিবেদনের জরিপ বিবেচনায় নেওয়া সূচকগুলো হলো-স্টার্টিং আ বিজনেস (ব্যবসা শুরু করা), ডিলিং উইথ কনস্ট্রাকশন পারমিট (নির্মাণ অনুমোদন-সংক্রান্ত), গ্রেটিং ইলেকট্রেসিটি (বিদ্যুৎ প্রাপ্তি), রেজিস্ট্রেশন প্রোপার্টি (সম্পত্তি নিবন্ধন), গ্রেটিং ক্রেডিট (ঋণপাপ্তি), প্রোটেকটিং মাইনরিটি ইনভেস্টরস (ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সুরক্ষা), পেয়িং ট্যাক্স (কর পরিশোধ), ট্রেডিং অ্যাক্রস বর্ডার (সীমান্ত বাণিজ্য), এনফার্সিং কন্ট্রাক্ট (চুক্তি কার্যকর) ও রিজলভিং ইনসলভেন্সি (দেউলিয়াত্ব ঘোচানো)।

সর্বশেষ গত বছর প্রকাশিত ডুয়িং বিজনেস রিপোর্ট-২০১৯ অনুযায়ী, ১০টি সূচকের মধ্যে এনফোর্সিং কন্ট্রাক্ট সূচকেই সবচেয়ে পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads