• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
দু-একদিনে কমবে পেঁয়াজের দাম -বাণিজ্যমন্ত্রী

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

সুদহার বেঁধে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

দু-একদিনে কমবে পেঁয়াজের দাম -বাণিজ্যমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ অক্টোবর ২০১৯

দু-একদিনের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, মিয়ানমার থেকে আজ (বুধবার) ৪৮৩ টন পেঁয়াজ টেকনাফে এসেছে। আরেকটি লটও আসবে আজ। সেটির পরিমাণ হবে ৪০০ থেকে ৫০০ টন। পাশাপাশি তুরস্ক থেকেও আসতে শুরু করেছে পেঁয়াজ। কাজেই দু’একদিনের মধ্যেই পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করবে। 

গতকাল বুধবার সচিবালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ভারত প্রথমে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে, পরে রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। আর সেই সংবাদে কিছু সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ী পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কারা কারা এই কাজ করেছে, সে ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য বাজারে বিশেষ মনিটরিং টিম কাজ করছে।

এদিকে, পেঁয়াজ আমদানিতে সুদহার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

তবে ক্রেতাদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতি ঠেকাতে ক্রেতাদেরও সচেতনতা খুব বেশি প্রয়োজন। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি করবে না, এই সংবাদ পেয়ে ক্রেতারা যেভাবে পেঁয়াজ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন, সেটিও অস্বাভাবিক দাম বাড়ার একটি কারণ।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে ৪২-৪৩ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ আনা হচ্ছে। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ এবং ব্যবসায়ীদের মুনাফা যুক্ত করে সর্বোচ্চ এর দাম হতে পারে ৫০-৫৫ টাকা। এর বেশি হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। ব্যবসায়ীরা যে দাম বাড়িয়েছে, তা পুরোপুরি অযৌক্তিক।

এদিকে পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হবে কি না-এমন প্রশ্নে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। আমরা একটা কস্টিং পেয়েছি, অনেক কিছু ওয়েস্ট হতে পারে, প্লাস প্রফিট ধরে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

পেঁয়াজ নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য নিজেদের পেঁয়াজ উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, আমাদের এটার চাষ বাড়াতে হবে, যাতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হই। এটাই একমাত্র স্থায়ী সমাধান।

এদিকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে এবং বেশি লাভ করলে ৬০ টাকার বেশি দাম হওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ দ্রুত আনা যায়। ল্যান্ডেড কস্ট ৪২-৪৩ টাকা, ঢাকায় আনার খরচ, লাভ নিয়ে দাম ৫৫ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। তারপরও বাজারে তো দাম বেশি। আমরা চেষ্টা করছি দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে।

খোলাবাজারে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি আরো বাড়ানো হবে কি না-জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে টিসিবির সঙ্গে কথা বলা হবে। দেশে উৎপাদিত হলেও ৭-৮ লাখ টন ঘাটতি থাকে। ভারত থেকে রপ্তানি বন্ধ হবে চিন্তাও করিনি, এটার ওপর তো কারো হাত নেই। ভাগ্য ভালো যে মিয়ানমার থেকে কম দামে পাচ্ছি।

এদিকে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের পড়ে দেশে হু হু করে বেড়ে গেছে দাম। আর সে সুযোগে জেঁকে বসেছে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। এতে বাজারে এখনো ১০০ টাকার নিচে মিলছে না পেঁয়াজ। এখনো কিছু বাজারে বিক্রি বন্ধ রেখে পেঁয়াজ মজুদ করার খবর পাওয়া যাচ্ছে, আবার কোথাও হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে পেঁয়াজ—এমন খবর মিলছে।

অন্যদিকে পেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। যার মধ্যে পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে এলসি মার্জিন এবং সুদহার হ্রাস করার জন্য পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। পাশাপাশি স্থল ও নৌবন্দরগুলোতে আমদানিকৃত পেঁয়াজ দ্রুত ও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খালাসের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও বন্দর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছে এবং ফোনে খোঁজখবর নিচ্ছে মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads