• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
আসছে ‘জরুরি পানি সরবরাহ প্রকল্প’

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয়

আসছে ‘জরুরি পানি সরবরাহ প্রকল্প’

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৪ অক্টোবর ২০১৯

রাজধানীবাসীর জীবনযাপনের মান উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য প্রায় সাড়ে সাতশ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, যা বাস্তবায়ন করবে ঢাকা ওয়াসা।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র থেকে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার প্রস্তাবিত ‘জরুরি পানি সরবরাহ প্রকল্পটি’ প্রাথমিক বাজেট ধরা হয়েছে ৭৩২ কোটি ৪২ লাখ টাকা, যা পুরোটাই সরকারি অর্থায়নে ব্যয় করা হবে। আর এর বাস্তবায়নের সময় ধরা হয়েছে ২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে আরো জানা গেছে, আগামী ১০ অক্টোবর পরিকল্পনা বিভাগে এ বিষয়ে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হবে। পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শামীমা নার্গিসের সভাপতিত্বে সভায় প্রকল্পটির নানাদিক মূল্যায়ন করা হবে। সভায় প্রকল্পটির কোনো সংশোধন করতে হলে সেই পরামর্শ দিয়ে আবারো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। প্রকল্পটির সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অনুমোদন দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্থানীয় সরকার বিভাগ জানায়, প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ঢাকা মহানগরীতে ক্রমবর্ধিষ্ণু পানির চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যমান পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনার অতিরিক্ত ৪৪৭ এমএলডি পানি সরবরাহ করা।

প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটির মূল কার্যক্রম সম্পর্কে ঢাকা ওয়াসা সূত্র থেকে জানা যায়, এই প্রকল্পের আওতায় অনেক ধরনের কার্যক্রম করা হবে। যেমন, পরামর্শক সেবা, গভীর নলকূপ স্থাপন (নতুন) ৯৫টি, গভীর নলকূপ প্রতিস্থাপন ২৮৫টি, গভীর নলকূপ রিজেনারেশন ১৯০টি, আয়রন রিমুভাল প্ল্যান্ট ৫০টি, রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং ৫০টি, স্কাডা সিস্টেম স্থাপন ১৯০টি, পাম্প ডেলিভারি লাইন স্থাপন ৩৮০টি, পাম্প ঘর নির্মাণ ২৫০টি, বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ ১০ কিলোমিটার, জয়েস্ট নির্মাণ ৩৮০টি, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন নির্মাণ ৯৫টি, বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশন শিফটিং ১৫০টি, জেনারেটর শিফটিং ১০০টি, পাম্প মোটর সেট ২০০টি, ক্লোরিনেশন  সেট ৯৫টি, ট্রান্সফরমার ৯৫টি, ফ্লোমিটার ৩৮০টি, নন রিটার্ন ভাল্ব ৩৮০টি, বৈদ্যুতিক  কেব্ল ৯ হাজার মিটার, কলাম পাইপ ৩৫ কিলোমিটার, পানির লাইন (মালামাল) ৭ কিলোমিটার, ডেলিভারি লাইন (মালামাল) ৫ দশমিক ৭ কিলোমিটার, ভূমি উন্নয়ন ও সংরক্ষণ ৪৮ হাজার ঘনমিটার, রাস্তা কাটার ক্ষতিপূরণ চার্জ ৯০০০ বর্গমিটার, বিদ্যুৎ সংযোগ ফি ৯৫টি, ৩টি ল্যাপটপ, ১০টি ডেস্কটপ, ৩টি ফটোকপিয়ার ক্রয়, ১টি জিপ গাড়ি ক্রয়, ডাবল কেবিন পিকআপ ২টি, মোটর সাইকেল ২০টি ইত্যাদি।

প্রকল্পটি সম্পর্কে ঢাকা ওয়াসা জানায়, ঢাকা ওয়াসা মহানগরবাসীর নিরাপদ সুপেয় পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। বর্তমানে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন-১৯৯৬ অনুযায়ী বাণিজ্যিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নগরবাসীদের সেবা প্রদান করছে। ঢাকা ওয়াসার দায়িত্ব হচ্ছে পাইপ লাইনের মাধ্যমে ঢাকা শহরের মানুষের জন্য সুপেয় পানি সরবরাহ করা। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসা গড়ে ২৪০০ এমএলডি পানি উৎপাদন ও সরবরাহ করছে। যার ৮০ শতাংশ ভূগর্ভস্থ উৎস হতে প্রায় ৮৫০টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে এবং ২০ শতাংশ পানি ভূ-পৃষ্ঠ উৎস হতে ৫টি পানি শোধনাগারের মাধ্যমে সরবরাহ করে থাকে।

বর্তমানে ঢাকার ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষের পানির চাহিদা হচ্ছে প্রায় ২৪০০ এমএলডি। প্রতি বছর জনসংখ্যা গড়ে ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সেইসঙ্গে গভীর নলকূপের উৎপাদন গড়ে ৫ শতাংশ হ্রাস পাচ্ছে। আগামী ২০২৩ সালে জনসংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

জনগণের জীবনযাত্রার মান ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি ঘটায় তাদের মাথাপিছু পরিমাণগত পানি ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে ঢাকা শহরের আকার বৃদ্ধি পাওয়ায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে পানির চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী ২০২৩ সালে পানির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়ে ৩৫০০ এমএলডি হবে। তাই এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা খুব জরুরি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads