প্রাথমিক শিক্ষকদের ১৪টি সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড এবং প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডে বেতন স্কেল নির্ধারণের দাবিতে সরকারকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ভবনের স্বাধীনতা হলে সংবাদ সম্মেলনে এই আল্টিমেটাম দেন নেতারা।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছে। সরকারি কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুণ করেছে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন কাঠামোতে এখনো অনেক বৈষম্য রয়ে গেছে। বিশেষ করে সরকারি অন্যান্য বিভাগের কর্মচারীদের সঙ্গে আমাদের বেতন স্কেলের ব্যাপক ব্যবধান রয়েছে।
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধীনে ডিপিএড কোর্স সম্পন্ন করে একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ১২তম গ্রেডে ১২ হাজার ৫০০ টাকা এবং একজন সহকারী শিক্ষক ১৫তম গ্রেডে ৯ হাজার ৭০০ টাকা বেতন পান। অথচ অন্য সরকারি ডিপার্টমেন্টে এর চেয়ে কম শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কয়েক গ্রেড ওপরের স্কেলে বেতন ভোগ করেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের একজন সেবিকা, কৃষি বিভাগের ব্লক সুপারভাইজার, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ক্যাটালগার, উচ্চমান সহকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চেয়ে কয়েক গ্রেড ওপরের স্কেলে বেতন পান। এ কারণে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতন স্কেল নির্ধারণ এবং প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড মর্যাদাসহ ১০ম বেতন স্কেল নির্ধারণের দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও আজও তা আলোর মুখ দেখেনি। তাই আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হচ্ছি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ১৪টি প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বেতন বৈষম্য নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
আগামী ১৩ অক্টোবরের মধ্যে দাবি আদায় না হলে ১৪ অক্টোবর শিক্ষকদের নিজ নিজ বিদ্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করা হবে। ১৫ অক্টোবর একই কর্মসূচি এবং ১৬ অক্টোবর নিজ নিজ বিদ্যালয়ে অর্ধ দিবস কর্মবিরতি, ১৭ অক্টোবর নিজ নিজ বিদ্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। এরপরও দাবি আদায় না হলে আগামী ২৩ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের মাধ্যমে পরবর্তী লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইসলাম তোতা, প্রধান সমন্বয়ক মো. আতিকুর রহমান আতিক, নীতি-নির্ধারণী কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ সরকার, আহ্বায়ক আনিসুর রহমান, মুখপাত্র বদরুল আলম প্রমুখ।
